নিয়ম ভেঙে ফানুস-আতশবাজিতে বর্ষবরণ
২০২২-এর পথে যখন উঁকি দিচ্ছিল নতুন বছর, তখন থেকেই তাকে বরণের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল নানা বয়সীরা। ঘড়িতে রাত ১২টার কাটা যখন ছুঁই ছুঁই, তখনই আকাশ ঝলমল করে ওঠে আতশবাজিতে। ২০২৩-এর আকাশে উড়তে থাকে ফানুস। রঙ্গিন হয়ে ওঠে আঁধারের বুক। যদিও এসব আয়োজনে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষেধাজ্ঞা। আর নিরাপত্তাও ছিল বেশ কড়াকড়। কিন্তু, মানুষের উচ্ছ্বাস যেন মানেনি কোনো বাধা। সবার আশা—রোগমুক্ত, হিংসামুক্ত হবে ২০২৩।
ইংরেজি বছরের শেষ দিন ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’ ঘিরে একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। নির্দেশনায় বলা ছিল—কোথাও আতশবাজি, পটকা ফোটানো বা ফানুস ওড়ানো যাবে না। কিন্তু ব্যাপক কড়াকড়ির মধ্যেই ফানুস উড়িয়ে ও আতশবাজি ফুটিয়ে ২০২৩ খ্রিস্টাব্দের প্রথম প্রহরকে বরণ করে নেওয়া হয়েছে ঢাকার প্রায় সব এলাকাতেই। বাড়ির ছাদে ছাদে আগে থেকেই ছিল সব বয়সী মানুষের ভিড়। বিশেষ করে পুরান ঢাকা, লালবাগ, গুলশান, বনানী। উন্মুক্ত স্থানে এসবের সুযোগ না থাকলেও বাধা মানেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকা। বর্ষবরণে সেখানে হাজির হয়েছিলেন বাইরের অনেকে। তাঁরাও ফানুস উড়িয়ে নতুন বছরের প্রথম প্রহরকে বরণ করে নেন। পুলিশের বিপুল সদস্য থাকলেও শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের উচ্ছ্বাসে তাঁরা কোনো হস্তক্ষেপ করেননি।
লালবাগের আবদুল জলিল বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এবারও আতশবাজির উৎসবে ভরপুর ছিল এলাকা। নিষেধাজ্ঞার পরও উড়েছে ফানুস। ছাদে ছাদে মানুষ ছিল ভরপুর। নতুন বছরের শুরুতেই কয়েকজন মিলে আমরা খাবারের আয়োজন করেছি। যদিও ফানুস ও আতশবাজি থেকে আমরা বিরত ছিলাম। তবে, আকাশ ছিল নয়নাভিরাম।’
টিএসসিতে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে ঘুরতে আসেন এক দম্পতি। তারা বলেন, ‘নতুন বছরকে স্বাগত জানাই। নতুন বছরটি সবার আনন্দময় কাটুক।’
ঢাবি পাঁচটি প্রবেশমুখে সন্ধ্যা থেকেই ছিল পুলিশের তল্লাশি। ওই সময় থেকেই মাইকে টিএসসি এলাকা ছাড়তে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম। তাদের আহ্বানে বেশির ভাগ মানুষ সাড়া দেয়। কিন্তু ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টার দিকে যত এগোতে থাকে, টিএসসি এলাকায় মানুষের ভিড় তত বাড়তে থাকে। পরে ১২টা বাজতেই আতশবাজি ফুটিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানান সেখানে উপস্থিত লোকজন।
উদ্যাপনে অংশ নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র বলেন, ‘টিএসসিতে উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে থার্টি ফার্স্ট উদ্যাপন ও ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম প্রহরকে বরণ একটি ঐতিহ্যবাহী আয়োজন। এবারও এ আয়োজনের অংশ হতে পেরে ভালো লাগছে।’