নেত্রকোনায় বজ্রপাতে আটজন নিহত
নেত্রকোনার কেন্দুয়া, মদন, খালিয়াজুরী ও পূর্বধলা উপজেলায় পৃথক পৃথক স্থানে বজ্রপাতে আটজন নিহত ও নয়জন আহত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ঝড়-বৃষ্টি চলাকালে বজ্রপাতে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে দুজন কেন্দুয়া উপজেলার বাসিন্দা। এঁদের মধ্যে কৃষক ফজলু মিয়া (৫৫) উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের কুণ্ডুলী গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে এবং কৃষক বায়েজিদ মিয়া (৪২) পাইকুড়া ইউনিয়নের বৈরাটি গ্রামের আসন খানের ছেলে।
কান্দিউড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শহীদুল্লাহ কায়সার ও পাইকুড়া ইউপির চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর চৌধুরী বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহ নেওয়াজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বাড়ির পাশে সবজি ক্ষেতে কাজ করছিলেন কুণ্ডুলী গ্রামের কৃষক ফজলু মিয়া। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাতে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন। অপরদিকে একই সময় বৈরাটি গ্রামের কৃষক বায়েজিদ মিয়া বাড়ির পাশের হাওরে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা গেছেন। এসব ঘটনায় থানায় পৃথক দুটি অপমৃত্যুর মামলা হবে বলেও জানান ওসি।
এদিকে জেলার মদন উপজেলার ফতেপুর গ্রামের আবদুল মন্নাফের ছেলে মাদ্রাসাছাত্র আতাবুর (২১) ও একই গ্রামের আবদুল কাদিরের ছেলে মাদ্রাসাছাত্র শরিফ (১৮) বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন চারজন। আহতদের মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আহতরা হলেন ফতেপুর গ্রামের মুসা মিয়ার ছেলে রবিন (১৫), চন্দন মিয়ার স্ত্রী সুরমা (২২), হিরন মিয়ার ছেলে রোমান (১৮) ও বাস্তা গ্রামের ভিক্ষু মিয়ার স্ত্রী করুনা (৪৫)।
মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বুলবুল আহমেদ বজ্রপাতে হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আহতদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। নিহতদের লাশ দাফন এবং আহতদের চিকিৎসায় সহযোগিতা করা হবে।
অপরদিকে জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের পুটিয়ার খালে মাছ ধরতে গিয়ে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় বজ্রপাতে আরও পাঁচজন আহত হয়। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
নিহত ব্যক্তিরা হচ্ছেন উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের বাতুয়াইল গ্রামের মৃত খেলু মিয়ার ছেলে অছেক মিয়া (৩৫), মৃত আমির মিয়ার ছেলে বিপুল মিয়া (৩২) ও মেন্দিপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের মনজুরুল হকের ছেলে মনির হোসেন (২৮)।
আহতরা হলেন গাজীপুর ইউনিয়নের বাতুয়াইল কান্দাপাড়ার মামুন মিয়া (৩২), জয়াদ মিয়া (৪৩), আতিকুল (৩২), শফিকুল (৩০) ও আবুল মিয়া (৩৭)।
খালিয়াজুরীর ইউএনও এইচ এম আরিফুল ইসলাম বলেন, গাজীপুর ইউনিয়নের পুটিয়ার খালে মাছ ধরতে গিয়ে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়। এ সময় বজ্রপাতে আরও পাঁচজন আহত হন। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শিবিরুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার বিকেলে বৃষ্টিপাত চলাকালে পূর্বধলা উপজেলার ধলামূলগাঁও ইউনিয়নের পালগী গ্রামে হঠাৎ বজ্রপাতে ইছাক ফকিরের ছেলে স্কুলছাত্র জুনায়েদ (১১) ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসক কাজী মো. আব্দুর রহমান বলেন, জেলার তিন উপজেলায় বয়ে যাওয়া ঝড় ও বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে আটজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি এবং আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। খুবই দুঃখজনক ঘটনা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারের সদস্যদের ১৫ হাজার এবং আহতদের তিন হাজার টাকা করে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।