পদ্মায় বিলীন শিবচরের আরেকটি বিদ্যালয়
পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তীব্র স্রোত অব্যাহত রয়েছে। এ কারণে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নদীভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। পদ্মার ভাঙনে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চরাঞ্চল কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের একটি তিনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টার ভবন নদীতে বিলীন হয়েছে। এ ছাড়া ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এখনো পানিবন্দি রয়েছে হাজার হাজার পরিবার।
ভাঙন প্রতিরোধে চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরীর নির্দেশনায় জিও ব্যাগ ডাম্পিং চালিয়ে যাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। চিফ হুইপের পক্ষ থেকে দুর্গতদের মধ্যে খাবার সহায়তা বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার শিবচরের পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি পেয়ে তীব্র স্রোত বইছে। এতে উপজেলার পদ্মা তীরবর্তী বন্দরখোলা, কাঁঠালবাড়ী ও চরজানাজায় নদীভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের ৭৭ নম্বর কাঁঠালবাড়ী সরকারি বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টার ভবনটির বৃহৎ অংশ বিলীন হয়। বিদ্যালয়টিতে ২৭২ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে।
কয়েক দিন ধরে বিদ্যালয়টি ভাঙন ঝুঁকিতে থাকায় চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরীর নির্দেশনায় ভাঙন প্রতিরোধে গত শুক্রবার বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি ও শিক্ষকদের উপস্থিতিতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়। তবে তীব্র স্রোতের কারণে বিদ্যালয়টি নদীতে বিলীন হয়ে যায়।
মঙ্গলবার বিকেলে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান বি এম আতাউর রহমান আতাহার, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম মাহতাফ উদ্দিন, জাহিদ হোসেন মোল্লা, মিনহাজুর রহমান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী রবিউলসহ শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা বিলীন হওয়া বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে, পদ্মা নদীর ভাঙনে কয়েক দিন আগেই বন্দরখোলা ইউনিয়নে একটি তিনতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন, কাজীর সূরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। আড়িয়াল খাঁ তীরবর্তী সন্ন্যাসীরচর, শিরুয়াইল, নিলখী ও বহেরাতলা দক্ষিণেও নদীভাঙনে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ পর্যন্ত নদীতে বিলীন হয়েছে সাড়ে চার শতাধিক ঘরবাড়ি। এসব এলাকায় খোলা ২১টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় তিন হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ডাম্পিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দুর্গত এলাকায় চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীর পক্ষ থেকে খাবার বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।