পরিদর্শক সোহেলের বিরুদ্ধে ভারতেও মামলা, ‘ফেরানো কঠিন হবে না’
গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের দায়ে অভিযুক্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের কথিত পৃষ্ঠপোষক বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে থাকলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।
আজ রোববার বিকেলে পুলিশ সদর দপ্তরে পুলিশের পদমর্যাদাভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি এ কথা বলেন।
পুলিশপ্রধান বলেন, ‘যিনি সরকারি চাকরি করবেন, তিনি সরকারি চাকরির বিধি বা নিয়মাবলি প্রতিপালন করবেন। এটা তার ব্যক্তিগত দায়িত্ব। কেউ যদি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন, এটার জন্য সরকারিবিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিধান রয়েছে। সোহেল রানা যদি এ ধরনের কোনো কিছুতে অংশগ্রহণ করে থাকেন, তাহলে তার এই দায়-দায়িত্ব নিতে হবে।’
‘সেটা ক্রিমিনাল অফেন্স হলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ হলে, তিনি যদি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে থাকেন, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা স্পষ্ট বুঝতেই পারছি সোহেল রানা নিয়মিত পথে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করেননি’, যোগ করেন পুলিশ মহাপরিদর্শক।
বেনজীর আহমেদ আরও বলেন, ‘কাউকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের ভারতের সঙ্গে মিউচুয়াল অ্যাগ্রিমেন্ট আছে। যেহেতু আমাদের এখানে সোহেল রানার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সেহেতু আসামি হিসেবে তাকে ফেরত আনা যাবে বলে আমরা মনে করি। আমরা ভারতে যোগাযোগ করছি। গতকাল আমাদের অনঅফিশিয়াল যোগাযোগ হয়েছে। এখন আমরা ফরমালি যোগাযোগ করে অনুরোধ করব, যাতে তাকে ফিরিয়ে আনা যায়।’
পুলিশপ্রধান বলেন, ‘ভারতেও সোহেল রানার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। সেহেতু, এ বিষয়টি নিয়ে ভারত সরকারেরও একটি সিদ্ধান্তের বিষয় রয়েছে। কিন্তু আমরা যেটা বলতে পারি, যেহেতু ভারতের সঙ্গে আমাদের একটা চুক্তি আছে। যেহেতু তিনি বাংলাদেশের একটি মামলার আসামি, সেহেতু তাকে ফেরত আনা কঠিন হবে বলে আমি মনে করি না। আর তিনি কীভাবে দেশত্যাগ করেছেন, সেখানে কারো গাফিলতি আছে কি-না তা আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
গত ১৭ আগস্ট অগ্রিম অর্থ পরিশোধের পরও মাসের পর মাস পণ্য না পাওয়ায় ই–অরেঞ্জের বিরুদ্ধে মামলা করেন প্রতারণার শিকার গ্রাহক মো. তাহেরুল ইসলাম। ওই সময় তাঁর সঙ্গে প্রতারণার শিকার আরও ৩৭ জন উপস্থিত ছিলেন। গ্রাহকের এক হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ওই মামলা হয়।
আসামিরা হলেন—ই–অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তাঁর স্বামী মাসুকুর রহমান, আমানউল্ল্যাহ, বিথী আক্তার, কাউসার আহমেদ ও পুলিশের বনানী থানার পরিদর্শক সোহেল রানা।
তবে, শুরু থেকেই ই–অরেঞ্জের সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন পরিদর্শক সোহেল রানা। যদিও অরেঞ্জ বাংলাদেশ নামে প্রতিষ্ঠান খুলতে নেওয়া টিআইএন সনদে পরিচালক হিসেবে সোহেল রানার নাম দেখা যায়। প্রতিষ্ঠানটি থেকে বিভিন্ন সময়ে আড়াই কোটি টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।