প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস আজ
আজ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস। দীর্ঘ প্রায় ১১ মাস কারবন্দি থাকার পর ২০০৮ সালের এই দিনে সংসদ ভবন চত্ত্বরে স্থাপিত বিশেষ কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন তিনি।
সেনা সমর্থিত ১/১১-এর (ওয়ান ইলেভেন বা ১১ জানুয়ারি) তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই ভোরে ধানমণ্ডির বাসভবন থেকে শেখ হাসিনা গ্রেপ্তার হন। গ্রেপ্তার করে প্রথমে তাঁকে ঢাকা মেট্রোপলিটন আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে সংসদ ভবন চত্ত্বরে স্থাপিত বিশেষ কারাগারে নিয়ে আটক রাখা হয়। এ সময় কারাগারের অভ্যন্তরে শেখ হাসিনা মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তাঁর চিকিৎসকরা তাঁকে বিদেশে চিকিৎসার পরামর্শ দেন।
সে সময় চিকিৎসার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে তাঁর মুক্তির জোরালো দাবি ওঠে। আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠন ও দেশবাসীর আন্দোলন, আপোষহীন মনোভাব এবং আওয়ামী লীগ বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগের পথ বেছে নেয়। শেখ হাসিনাকে মুক্তি দেওয়া না হলে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে যাবে না বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়। অনড় দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।
মুক্তি পেয়েই শেখ হাসিনা চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর অস্থায়ী জামিনের মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। এরপর ২০০৮ সালের ৬ নভেম্বর দেশে ফিরলে স্থায়ী জামিন দেওয়া হয় তাঁকে।
একই বছর ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল সংখ্যাগর্ষ্ঠিতা নিয়ে বিজয় লাভ করে। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠন করা হয়।
এ সময় ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুর এক ব্যক্তিগত ট্রাজেডির ধকল সামলানোর পাশাপাশি প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির নানা রাজনৈতিক কূটচাল, ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হয়েছে শেখ হাসিনাকে। তবে ১৯৭৫ সালে তাঁকে যে ভয়াবহ অবর্ণনীয় ব্যক্তিগত বেদনা বহন করতে হয় তা অকল্পনীয়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবার পরিজনকে নৃশংস-বর্বরোচিত পন্থায় হত্যা করার মধ্য দিয়ে দেশে এক অন্ধকার যুগের সূচনা হয়। ১৯৭৫ পরবর্তী স্বৈরশাসকগোষ্ঠী দেশের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেয়।
দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং জনগণের ভোটের অধিকার সুনিশ্চিত করতে সুদীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে বন্ধুর বিপদসঙ্কুল পথ অতিক্রম করতে হয়েছে শেখ হাসিনাকে। এর মধ্যে অনেকবারই তাঁর প্রাণনাশের চেষ্টাও হয়েছে।
এ বছর বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে সব ধরনের জনসমাগমপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি পরিহার করায় শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে না আওয়ামী লীগ।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে যার যার জায়গা থেকে তাঁর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে পরম করুণাময়ের নিকট দেশবাসীকে প্রার্থনা করার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে হৃদয়ে দেশপ্রেমের বহ্নিশিখা প্রজ্বলিত করে নভের করোনাভাইরাসের সংকট জয়ের ঐক্যবদ্ধ সুরক্ষা সৃষ্টি করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারকে সহযোগিতা করার অনুরোধও জানান কাদের।