ফাঁসির আদেশের ২০ বছর পর খালাস পেলেন জাহিদ শেখ
স্ত্রী ও নিজ মেয়েকে হত্যার দায়ে ২০ বছর আগে ফাঁসির দণ্ডাদেশ পেয়েছিলেন খুলনার নারিকেলি চানপুরের বাসিন্দা জাহিদ শেখ। এত দিন ধরে ফাঁসির আসামিদের জন্য বরাদ্দ করা কনডেম সেলে ছিলেন তিনি। সেই জাহিদ শেখকে খালাসের নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ গতকাল মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আদালতে আসামির পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী সারওয়ার আহমেদ।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ বলেন, যাদের সাক্ষীর মাধ্যমে প্রমাণ করা হয়েছে যে ওই দিনে জাহিদ শেখ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, তাদের ১৬১ ধারায় জবানবন্দি তদন্ত কর্মকর্তা গ্রহণ করেছেন কিনা, সে বিষয়ে কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। পরে আদালত শেখ জাহিদকে খালাস দেওয়ার রায় দেন। রায়ের অনুলিপি কারাগারে পৌঁছানোর পর তাঁকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে বাগেরহাটে নিজ বাড়িতে জাহিদ শেখের স্ত্রী রহিমা ও তাঁর মেয়ে রেশমা খাতুন খুন হন। পরে রহিমার বাবা মো. ময়েন উদ্দিন শেখ বাগেরহাটের ফকিরহাট থানায় বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় আসামি হিসেবে জাহিদ শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিচার প্রক্রিয়া শেষে এ মামলায় ২০০০ সালের জুন মাসে তাঁকে ফাঁসির আদেশ দেন বাগেরহাটের দায়রা জজ আদালত। এরপর ২০০৪ সালে বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের শুনানির জন্য তা (ডেথ রেফারেন্স) হাইকোর্টে আসে। শুনানি শেষে হাইকোর্ট বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখেন। এদিকে ২০০৭ সালে মামলাটি আপিল বিভাগে আসে। দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা মামলাটি প্রধান বিচারপতির নজরে আসে। এর পর থেকেই মামলাটির শুনানি শুরু হয় এবং শুনানিতে মামলাটির বিভিন্ন অসংগতি প্রকাশ পায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে জাহিদ শেখকে খালাস দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে রায় দেন আপিল বিভাগ।