ফাইজারের টিকা পাবে শুধু ঢাকাবাসী : স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
ঢাকা মহানগরের নির্দিষ্ট হাসপাতালেই শুধু ফাইজারের করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেসব হাসপাতালে এরই মধ্যে যারা নিবন্ধন করেছেন তাঁরাই ফাইজারের টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
আজ বুধবার করোনাবিষয়ক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। এ সময় তিনি বিভিন্ন প্রশ্নেরও উত্তর দেন।
গত ৩১ মে রাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) উদ্যোগে গঠিত টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে ফাইজারের এক লাখ ৬২০ ডোজ টিকা এসে পৌঁছে। এর আগে দেশে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অ্যাস্ট্রেজেনেকা এবং চীনের তৈরি সিনোফার্মার টিকা দেশে আসে।
গত সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এক অনুষ্ঠানে জানান, আগামী ১৩ জুন থেকে দেশে ফাইজারের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে। সরকার টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে কাউকে অগ্রাধিকার দেয়নি। ফাইজারের টিকার ক্ষেত্রেও কাউকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে না। নিবন্ধন অনুযায়ী যাদের নাম আগে আসবে, তাদেরই আগে টিকা দেওয়া হবে।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্রের কাছে একজনের প্রশ্ন ছিল- নিবন্ধন করে টিকার তারিখ পেয়েও যারা টিকা নিতে পারেননি বা নিতে চাননি তাঁরা কি ফাইজারের টিকা পাবেন?
এমন প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘এটি নির্ভর করবে তাঁরা কোন কেন্দ্রে রেজিস্ট্রেশন করেছেন। ফাইজারের টিকা কেবলমাত্র ঢাকা মহানগরে আপাতত নির্দিষ্ট কিছু হাসপাতালে প্রদান করা হবে। যারা ওই হাসপাতালগুলোতে নিবন্ধন করেছিলেন, যারা কোনো কারণে আগে ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে পারেননি, তাঁরা তো নিশ্চয়ই সেই বিবেচনায় আসবেন। এটি আমরা মনে করি যে, যতক্ষণ টিকা আছে- ফাইজারের টিকা দেওয়ার জন্য ভ্যাকসিন ডেপলয়মেন্ট প্ল্যানে যেটি করা আছে সেই সুযোগটি পাবেন।’
‘আশা করছি, শিগগির আমরা প্রথম ডোজের টিকাদান কর্মসূচি চালু করতে পারব এবং দ্বিতীয় ডোজের টিকার জন্য যারা অপেক্ষমাণ, তারাও যথাসময়ে টিকা পেয়ে যাবেন।’
ডা. নাজমুল ইসলাম আরও বলেন, ‘দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনা সংক্রমণ রোধে বিধিনিষেধ আরোপের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং ব্যক্তিপর্যায়ে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তা বাস্তবায়নে শিথিলতার পরিচয় দিলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘গত ৪ জুন থেকে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে এবং সেটা গত ৮ জুন পর্যন্ত বেড়ে ১২ শতাংশের বেশি হয়েছে। এ ছাড়া সীমান্তবর্তী কিছু জেলায় স্বাস্থ্য প্রশাসনের পরামর্শে স্থানীয় প্রশাসন কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন করছে। এটা সবার মঙ্গলের জন্য করা হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র আরও বলেন, ‘কোনো জায়গায় শিথিলতার পরিচয় দিলে সেটি আমাদের জন্য ভালো ফলাফল বয়ে আনবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘জয়পুরহাটে শতকরা হিসেবে শনাক্তের হার ২৫ শতাংশের বেশি, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৯ শতাংশের বেশি, রাজশাহীতে ২৩ শতাংশের বেশি। এই জায়গাগুলোতে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি রয়েছে। এসব জায়গায় লকডাউন বা বিধিনিষেধ আরোপ করায় স্থিতি অবস্থা আছে। এটি যদি অব্যাহত রাখা যায়, তাহলে ঊর্ধ্বগতি থেকে আমরা রেহাই পেতে পারি।’