বান্দরবানে গুলিতে আ.লীগ নেতা নিহত, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে বান্দরবানের জামছড়িতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বাচুনো মারমা (৫৪) নামের একজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আতঙ্কে হৃদরোগে মারা গেছেন বাখোয়াই মারমা (৬৩) নামের একজন। সন্ত্রাসীদের গুলিতে যুবলীগ নেতাসহ পাঁচজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। প্রতিবাদে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ ঘটনা ঘটে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানায়, আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে বান্দরবান সদর উপজেলার রাজবিলা ইউনিয়নের জামছড়িতে পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠনের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রুপের ১০ থেকে ১২ সদস্য এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে। এ সময় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নিহত ও যুবলীগের সাবেক নেতাসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। গুলির শব্দ শুনে মারা যান বাখোয়াই মারমা।
আহত ব্যক্তিরা হলেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য উচ থোয়াই (৬৫), যুবলীগ নেতা মংক্যা চিং মারমা (২৫) ও হ্লামং চিং (৩০), ক্যাপোমং (৪৫) এবং প্রতিবন্ধী আধাসী (২৬)।
এদিকে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণের ঘটনায় আতঙ্কে জামছড়ি বাজারসহ আশপাশের পাহাড়ি গ্রামের লোকজন দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করে। জামছড়ি বাজারের ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকাগুলো নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছেন। স্থানীয়দের সহায়তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হতাহতদের উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে আওয়ামী লীগের এক নেতা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। এ সময় আতঙ্কে আরো একজন বৃদ্ধ মারা গেছেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন আরো পাঁচজন। হতাহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে বান্দরবান শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে। পরে ট্রাফিক মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুর রহিম চৌধুরী, পৌরশাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি অমল কান্তি দাস, সাধারণ সম্পাদক সামশুল ইসলাম, পৌর কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান খোকন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কাওছার সোহাগ প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে আওয়ামী লীগ নেতারা ঘটনার জন্য জনসংহতি সমিতির সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরেন্দ্র বোধিপ্রিয় সন্তু লারমাকে দায়ী করেছেন। দ্রুত হামলাকারী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুর রহিম চৌধুরী।