বিচারক নিয়োগ পরীক্ষায় সুযোগ চেয়ে অন্ধ ব্যক্তির রিট

ছবি : সংগৃহীত
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সুদীপ দাস বিচারক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছেন। রিটে তিনি তাঁর পরীক্ষায় শ্রুতিলেখক দিতে নির্দেশনা চেয়েছেন।
আজ বুধবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুদীপ দাসের পক্ষে অ্যাডভোকেট কুমার দেবুল দে এ রিট দায়ের করেন।
বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে। আগামী শুক্রবার বিচারক নিয়োগের জন্য পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে গতকাল সুদীপ দাসকে নিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘অন্ধ হলে বিচারক হওয়াও যেন বন্ধ।’
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসে বিচারক নিয়োগবিধিতে রয়েছে এমনটা। যাতে নেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী কাউকে শ্রুতিলেখক দেওয়ার নিয়ম। ফলে পরপর দুই বছর পরীক্ষায় বসলেও খালি খাতা ফেরত দেন হতভাগ্য সুদীপ। জীবনযুদ্ধে এতটা পথ পাড়ি দিয়েও এখন হতাশ এই যুবক। যদিও ভারত, পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রে দায়িত্ব পালন করছেন অন্ধ বিচারকরা।
সুদীপ দাস একবুক স্বপ্ন নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন পড়েছিলেন বিচারক হবেন বলে।
কিন্তু সেই আইন পড়াটাই যেন কাল হয়েছে তাঁর জন্য। এক বন্ধুর হাত ধরে সুপ্রিম কোর্টে আসেন সুদীপ দাস। কথায় কথায় জানালেন তাঁর আশঙ্কার কথা।
আগামী শুক্রবার হতে যাওয়া বিচারক নিয়োগ পরীক্ষায় কি অংশ নিতে পারবেন? কেননা, গত দুই বছর প্রবেশপত্র পেয়েও দিতে পারেননি এই পরীক্ষা। দেড় ঘণ্টা হলে বসে থেকেও নিরাশ হয়ে ফিরতে হয় শ্রুতিলেখক না পাওয়ায়। পরীক্ষার আগে বারবার যোগাযোগ করছিলেন বাংলাদেশ জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সঙ্গে। কিন্তু আইনি মারপ্যাঁচে মেলেনি কোনো সহযোগিতা।
ভুক্তভোগী সুদীপ দাস বলেন, ‘আমি শ্রুতিলেখক ছাড়াই পরীক্ষাটা দিই। দেড় ঘণ্টা হলে বসেছিলাম। কিছু লিখতে পারিনি। ওএমআর শিট পূরণ করেছি শিক্ষক ও পাশে থাকা পরীক্ষার্থীদের সহায়তায়। উত্তীর্ণ হওয়া তো দূরের কথা। আমি পরীক্ষাটা দিতে চাই। অনেকে আমাকে জিজ্ঞাসা করে, তুমি আবেদন করতেছ, তোমাকে তো অনুমোদন দিচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘আমাকে হয়তো অনুমতি দিচ্ছে না। কিন্তু আমার হাত ধরে যদি আমার অনুজ যাঁরা আছেন, তাঁরা যেন অনুমতি পায়।’