বিজ্ঞাপনমুক্ত বিদেশি চ্যানেল বাস্তবায়নে শুক্রবার থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত
আইন অনুযায়ী দেশে বিদেশি চ্যানেলগুলোর বিজ্ঞাপনমুক্ত (ক্লিন ফিড) সম্প্রচার বাস্তবায়নে আগামীকাল শুক্রবার থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইন প্রয়োগে এ ব্যবস্থার কথা জানান মন্ত্রী।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘১ অক্টোবর থেকে আমরা সারা দেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করব। কোনো বিদেশি চ্যানেলে ক্লিন ফিড দেখানো না হলে এবং মন্ত্রণালয়, টেলিভিশন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও কেবল অপারেটর ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের মাধ্যমে কেবল লাইনে সম্প্রচারের জন্য টেলিভিশনগুলোর নির্ধারিত ক্রমের ব্যত্যয় হলে বা কোনো কেবল অপারেটর আইন ভঙ্গ করে নিজেরা বিজ্ঞাপন, অনুষ্ঠান প্রদর্শন করলে বা আইনের অন্য কোনো ব্যত্যয় ঘটালে সংশ্লিষ্ট চ্যানেল ডাউনলিংকের অনুমতিপ্রাপ্ত ডিস্ট্রিবিউটরদের এবং কেবল অপারেটরদের ওপরই আইন ভঙ্গের দায় বর্তাবে এবং আগামীকাল থেকে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তথ্যমন্ত্রী জানান, ‘যারা বিদেশি চ্যানেল ডাউনলিংকের অনুমতি পেয়েছে ক্লিন ফিডের ব্যাপারে তাদের সঙ্গে আগস্ট মাসে বৈঠক করে আমরা জানিয়ে দিয়েছিলাম যে, ১ অক্টোবর থেকে আমরা আইন প্রয়োগ করব। দিনের পর দিন তারা সময় নেবে, কালক্ষেপণ করবে, এটি হয় না। ভারত, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, নেপালসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে ক্লিন ফিড ছাড়া বিদেশি চ্যানেল কেউ দেখাতে পারে না। আর আমাদের দেশে বিদেশি চ্যানেলগুলো ক্লিন ফিড পাঠাচ্ছে না, এই অজুহাতে এখানে ক্লিন ফিড চালাবে না এটা হয় না।’
১ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশে ক্লিন ফিড সম্প্রচার কার্যকর করার বিষয়টি সম্প্রতি দিল্লি সফরকালে ভারতের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীকেও জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন ড. হাছান মাহমুদ।
‘অনলাইন পোর্টাল বন্ধে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, নিরসন হয়েছে’
সম্প্রতি সরকারি এবং নিবন্ধিত অনেকগুলো অনলাইন সংবাদপোর্টাল বিটিআরসি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছিল, এ সম্পর্কিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল এবং সেটি খুব দ্রুততার সঙ্গে নিরসন হয়েছে। অনলাইন পোর্টাল বন্ধ করা এবং অনুমোদন দেওয়া দুটিই চলমান প্রক্রিয়া। যে অনলাইন পোর্টালগুলো গর্হিত কাজ করে কিংবা সৎ উদ্দেশ্যে পরিচালিত নয় কিংবা গুজব রটায়, সেগুলো বন্ধ করা চলমান প্রক্রিয়া।’
এর অংশ হিসেবে আমরা খুব সহসা বিটিআরসিকে তালিকা দেব- উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সেই সঙ্গে আদালতকেও আমরা জানাব যে, এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া এবং সবগুলো একসঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত হবে, তা ভাবার প্রয়োজন রয়েছে।’
‘বাংলাদেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য বিএনপির দাবির বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশে আর কখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। সংবিধান অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো সুযোগ নেই। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, নির্বাচনকালীন বর্তমান সরকারই নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। যখন নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করা হয় তখন প্রশাসনের ওপর সরকারের আসলে কোনো কার্যকারিতা থাকে না। বিএনপি এ ধরনের কথা গত সাড়ে ১২ বছর ধরে বলে আসছে, গত নির্বাচনের আগেও বলেছিল, পরে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের এটা নতুন কিছু নয়। তবে, একটি রাজনৈতিক দলের জন্য নির্বাচন হচ্ছে দলের মধ্যে প্রাণসঞ্চালনের একটি বড় সুযোগ। নিজের শিরা-উপশিরাকে শুকিয়ে বিএনপি ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে চলে যাবে কি না, সে সিদ্ধান্ত বিএনপিই নেবে।’
ড. হাছান মাহমুদ এর আগে কবি ও সাংবাদিক সৌমিত্র দেব সম্পাদিত ‘উন্নয়নে উজ্জীবনে শেখ হাসিনা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। এ সময় মন্ত্রী গ্রন্থটি সংকলন ও সম্পাদনার জন্য সৌমিত্র দেবকে অভিনন্দন জানান।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বিশ্বসম্প্রদায়ের কাছে এক বিস্ময়কর নেতৃত্বের উদাহরণ। সে কারণেই বিশ্ব নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সামনে ‘কেইস স্টাডি’ হিসেবে উপস্থাপন করছেন এবং জাতিসংঘসহ বিশ্বসম্প্রদায় প্রধানমন্ত্রীকে অনেক পুরস্কারে ভূষিত করেছেন।
শ্রেষ্ঠপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত ৯৬ পৃষ্ঠার ২১টি প্রবন্ধের এই সংকলনটি শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেভাবে উজ্জীবিত করেছেন, সেবিষয়ে মানুষ সহজে জানতে পারবে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।