ব্যাংক খাতের অনিয়ম দুর্নীতিরোধে কমিটি গঠনের নির্দেশ

ব্যাংক খাতের অনিয়ম, দুর্নীতি এবং এর কারণ অনুসন্ধান করে প্রতিকারের উপায় খুঁজে বের করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নয় সদস্য কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে কমিশন গঠন করতে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
এ সময় আদালত বলেন, ‘এ ছাড়া ঋণ খেলাপিদের নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা প্রজ্ঞাপন নিয়ে হাইকোর্ট হস্তক্ষেপ করবে না।’
আজ মঙ্গলবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মোট ঋণের ২ শতাংশ এককালীন জমা দিয়ে একজন ঋণখেলাপি ১০ বছরের জন্য ঋণ পুনঃ তফসিলের সুযোগ পাবেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন নীতিমালা কেন বেআইনি ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না,তা জানতে চেয়ে রুল নিষ্পত্তি করে এসব নির্দেশনা দিয়ে রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আজমালুল হক কিউসি ও মুনীরুজ্জামান।
আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত একটানা রায় ঘোষণা করা হয়।
এর আগে গত ২৮ অক্টোবর আর্থিক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা বন্ধে কমিশন গঠন এবং ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট সংক্রান্ত জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়।
মানবাধিকার সংগঠন এইচআরপিবির করা এক রিট আবেদনে হাইকোর্ট গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে ঋণখেলাপির তালিকা দাখিলের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে রুল জারি করেন। রুলে আর্থিক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা বন্ধে কমিশন গঠনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং এই কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
পরে গত ২৪ জুন বাংলাদেশ ব্যাংক সিলগালা করে ঋণখেলাপিদের তালিকা হাইকোর্টে দাখিল করেছিল। এর মধ্যে গত ১৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়। এরপর রিটকারীদের আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২১ মে ওই সার্কুলারের ওপর ২৪ জুন পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজার রাখার জন্য আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২ জুলাই আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ৮ জুলাই পর্যন্ত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। ৮ জুলাই এ স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ান।
তবে যারা ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টের সুবিধা নেবেন তারা নতুন করে ঋণ নিতে পারবেন না। এ ছাড়া বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন কোর্টে এ রিট মামলা শুনানি করতে বলেন। তার ধারাবাহিকতায় রুলের শুনানি শেষে আদালত ওই আদেশ দেন।