ভালোবাসার মমতা ছাড়লেন দুই বিয়ের সেই রোহিনীকে
অবশেষে দুই স্ত্রী গ্রহণ করে ভাইরাল রোহিনী চন্দ্র রায়ের দ্বিতীয় স্ত্রী মমতা রাণী ছেড়ে গেলেন স্বামীকে। বিয়ের ২২ দিনের মাথায় তাঁদের বিচ্ছেদ ঘটল। উভয়পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে একে অপরের সঙ্গে অ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে বিচ্ছেদ হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এর বেশি মুখ খুলতে নারাজ উভয় পরিবার।
পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীদার ইউনিয়নের যামিনী চন্দ্র রায়ের ছেলে রোহিনী চন্দ্র রায় গত ২০ এপ্রিল এক সঙ্গে দুই জনকে বিয়ে করে ভাইরাল হয়েছিলেন। গত বৃহস্পতিবার উভয় পরিবারের সমঝোতার ভিত্তিতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন বলরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন, মমতা রানীর বাবা টোনো কিশোর ও মমতা রানীর ভাই পলাশ চন্দ্র রায় রোহিনী ও মমতা রানী।
সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, কিছু অর্থের বিনিময়, রোহিনীর পরিবারে অসন্তোষ, দুই বিয়ে নিয়ে এলাকায় জনশ্রুতি, হিন্দু ধর্মাবলম্বী বিবাহ আইন অনুযায়ী ও ধর্মমতে শুদ্ধ না হওয়াসহ নানা কারণে এই বিয়ে টেকেনি বলে স্থানীয়রা বলছেন।
মমতা রানীর ভাই পলাশ চন্দ্র রায় বলেন, ‘দুই বিয়ের বিষয়টি আমরা আর বাড়াবাড়ি করতে চাই না। সমাজে এমনিতেই আমাদের অনেক কথা শুনতে হয়েছে। বোনের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের পরিবারের পক্ষে এ নিয়ে কোন অভিযোগ নেই।’
রোহিনীর বাবা যামিনী চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে কোনো চাপ ছিল না। তবে, উভয়পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে মমতা রানী স্বেচ্ছায় আমার ছেলেকে তালাক দিয়েছেন।’
বলরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিচ্ছেদের বিষয়টি আমি শুনেছি। উভয় পরিবারের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। মেয়েটি স্বেচ্ছায় ছেলেটিকে তালাক দিয়েছে। তবে, অফিসিয়ালি আমার কাছে কেউ কোনো চিঠিপত্র দেয়নি।’
জেলার বোদা উপজেলার হিন্দু বিবাহ রেজিস্টার পরেশ চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘হিন্দু ধর্ম মতে কোনো পুরুষ তাঁর স্ত্রীকে তালাক দিতে পারবেন না। তবে, কোনো স্ত্রী স্বেচ্ছায় যে কোনো কারণে স্বামীকে তালাক দিতে পারেন। এটি আইনসিদ্ধ।’
উল্লেখ্য, গত ২০ এপ্রিল রোহিনী চন্দ্র রায় তাঁর দুই প্রেমিকা বলামপুর ইউনিয়নের গাঠিশাপাড়া এলাকার গিরিশ চন্দ্রের মেয়ে ইতি রানী (২০) এবং একই ইউনিয়নের উত্তর লক্ষীদ্বার গ্রামের টনোকিশোর রায়ের মেয়ে মমতা রানীকে (১৮) হিন্দু শাস্ত্রমতে এক সঙ্গে বিবাহ করেছিলেন। তাঁর বিয়ের এই বিষয়টি পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ এলাকায় ভাইরাল হয়।