ভুয়ায় ভরা জীবন যার
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/11/13/capture.jpg)
দারিদ্র্য বিমোচন ও সমাজসেবাসহ নানার ধরনের প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জে ভুয়া মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানের এক চেয়ারম্যানকে আটক করেছে র্যাব। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ওই ব্যক্তিকে সদর উপজেলার জামতলা এলাকা থেকে আটক করে র্যাব-১১।
আটক হওয়া ওই ব্যক্তির নাম সাইদুজ্জামান নূর রাকিব।
অভিযান পরিচালনাকারী র্যাব-১১-এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, অভিযানে বিপুল অবৈধ পাসপোর্ট ও জাল নথিপত্রসহ প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। ওই এলাকায় সামছুল হুদার বাড়ির ছয় তলায় তিনি ভাড়া থাকতেন। ভবনের উপরের তলায় ‘নূর ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন’ ও ‘নূর প্রোপার্টি এলিভিয়েশন অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস সোসাইটি’ নামের দুটি ভুয়া মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানের অফিস। সেখানে ৩২ জন কর্মীও রয়েছে।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, মাত্র অষ্টম শ্রেণি পাস ওই ব্যক্তি নিজেকে ‘দৈনিক মানবতার আলো’ এবং ‘নিউজ ডাইজেস্ট ওয়ার্ল্ড’ নামের বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকার সম্পাদক দাবি করলেও এর কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি। সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে নানা ধরনের প্রতারণার অভিযোগ এলে র্যাব তদন্ত করে এর সত্যতা পেয়ে গতকাল সন্ধ্যায় অভিযান চালায়। সেখান থেকে জব্দ করা হয়েছে প্রতারণার নথিপত্র, বিভিন্ন ব্যাংকের ভুয়া চেক-রশিদের ফটোকপি, অর্ধশত অবৈধ পাসপোর্ট, একটি টেলিস্কোপ, বিদেশ থেকে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা ২৮ হাজার টাকা মূল্যের ইতালির তৈরি একটি অত্যাধুনিক খেলনা পিস্তল ও বড় আকারের একটি ছুরি। পরে এসব অবৈধ আলামতসহ তাঁকে আটক করা হয়।
র্যাব কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, আটককৃত সাইদুজ্জামান নূর রাকিব চার বছর আগে সরকারি অনুমোদনহীন অবৈধ প্রতিষ্ঠান খুলে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা শুরু করেন। মানবসেবা করে তিনি ও তাঁর প্রতিষ্ঠানের নামে পাওয়া বঙ্গবন্ধু পদক, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী পদক, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ পদক, মাইকেল মধুসূদন দত্ত পদক, মাদার তেরেসা পদক ও মহত্মা গান্ধী পদকসহ ৩৫টি ভুয়া সম্মাননা পদক সাজিয়ে রেখে মানুষকে আকৃষ্ট করতেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, মানবসেবার জন্য রাশিয়া থেকে ১০০ কোটি টাকার অনুদান পেয়েছেন বলে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া শুরু করেন। প্রতারণার মাধ্যমে এ পর্যন্ত তিনি কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকারও করেছেন।
তবে র্যাব বলছে, তাঁর প্রতারণার শিকার এমন শতাধিক ব্যক্তির বায়োডাটা ও তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাঁর বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে র্যাব জানিয়েছে।