ভ্রাম্যমাণ আদালতে শিশুদের সাজা অবৈধ : হাইকোর্ট
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন মামলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শিশুদের সাজা দেওয়া অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
আজ বুধবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
এর আগে আজ ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এনে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুজ্জামান ও নিজাম উদ্দিনের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ক্ষমতা (ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা) বাতিল করতে হাইকোর্টে একটি সম্পূরক রিট আবেদন করা হয়। আবেদনের পর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শিশুদের দণ্ডের বিরুদ্ধে জারি করা রুলের সঙ্গে সম্পূরক আবেদনটিও আজ আদেশের জন্য রাখা হয়েছে।
আজ চিলড্রেনস চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের (সিসিবি ফাউন্ডেশন) পক্ষে ওই আবেদনটি করা হয়েছে।
আবেদনে ওই তিন ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে কয়েকটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- একই সময়ের মধ্যে দুই জায়গায় (শিশুমেলা ও ফার্মগেট) ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার অভিযোগ, যা ক্ষমতার অপব্যবহার। একই সাক্ষীরা বার বার বিভিন্ন জায়গায় এসেছেন, এক ধারার অপরাধ দেখিয়ে ভিন্ন ধারায় চার্জ গঠন, চলন্ত ভ্যান থেকে কলা চুরির অপরাধে ৬ মাসের সাজা, যা মোবাইল কোর্ট দিতে পারে না। এ ছাড়া আরো আছে ৯, ১০ ও ১১ বছর বয়সী শিশুদের সাজা দেওয়া হয়েছে, যেখানে দণ্ডবিধির ৮৩ ধারা অনুযায়ী ১২ বছরের নিচের শিশুদের সাজা দেওয়া যায় না। আবেদনে বলা হয়েছে, সাজানো সাক্ষী, সাজানো মামলা আর ক্ষমতার চূড়ান্ত অপব্যবহার করেছেন তাঁরা।
জোর করে শিশুদের স্বীকারোক্তি আদায়ের অভিযোগও আনা হয়েছে। যা সংবিধানের ৩৩ ও ৩৫ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ৩১ অক্টোবর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শিশুদের দেওয়া দণ্ড ও আটকাদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। একইসঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেওয়া দণ্ডে যশোর ও টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে অন্তরীণ ১২১ শিশুকে মুক্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আদালতের আদেশে পর এসব শিশুকে মুক্তি দেওয়া হয়।
‘আইনে মানা, তবু ১২১ শিশুর দণ্ড’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি নজরে নিয়ে আদালত শিশুদের মুক্তির নির্দেশ ও রুল জারি করেন।
প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন সিসিবি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম ও সংস্থাটির পরিচালক অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।