মধুর সন্ধানে সুন্দরবনে মৌয়ালরা
মানুষের জন্য এক অপূর্ব নেয়ামত মধু। স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও যাবতীয় রোগ নিরাময়ে এর গুণ অপরিসীম। আয়ুর্বেদ ও ইউনানি চিকিৎসা শাস্ত্রে মধুকে বলা হয় মহৌষধ। মধুপ্রেমীদের কাছে সুন্দরবনের খাঁটি মধুর কদর অন্যরকম। আর জাতীয় অর্থনীতিতে সুন্দরবনের মধুর অবদান ব্যাপক। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ মৌসুম।
বনবিবির নাম স্মরে মোম ও মধুর সন্ধানে সুন্দরবনের গহীন জঙ্গলে গতকাল বৃহস্পতিবার যান কয়েকশ মৌয়াল। তাঁরা পশ্চিম সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় থেকে প্রবেশ করতে শুরু করেন। আজ শুক্রবারও অনেক মৌয়াল সুন্দরবনের নদীতে নৌকা ভাসিয়েছেন।
মৌয়ালদের বিশ্বাস তাঁদের সঙ্গে রয়েছে বনবিবির দোয়া ও আশীর্বাদ। সেইসঙ্গে লাল রুমাল এবং বনবিবির থানের মাটিও নিয়ে গেছেন তাঁরা। তাদের বিশ্বাস বনবিবিকে স্মরণ করলে বাঘ বা অন্য কোনো জীবজন্তু তাঁদের ওপর হামলা করার সাহস করবে না।
পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এম এ হাসান জানান, ১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে সুন্দরবনের মধু সংগ্রহের মৌসুম। টানা তিন মাস চলবে এ মৌসুম। প্রথমদিন ৭৫০ জন মৌয়াল বনবিভাগের পাস নিয়ে বনে প্রবেশ করেছে।
আরও দু-তিন দিন মৌয়ালরা বনে যাবে বলে ধারণা করছেন সহকারী বন সংরক্ষক এম এ হাসান। তিনি জানান, চলতি বছর সাতক্ষীরা রেঞ্জে এক হাজার ৫০ কুইন্টাল মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। একই সঙ্গে মোম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ৪৫০ কুইন্টাল।
সহকারী বন সংরক্ষক আরও জানান, গত বছর মধু সংগ্রহ হয় ১০০৬ কুইন্টাল এবং ৬০২ কুইন্টাল মোম। এ বছর মৌয়ালদের কিছু বাড়তি দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সংরক্ষিত বন অঞ্চলে না যাওয়া, মৌচাক ভাঙতে কোনো ধরনের অগ্নিকাণ্ড করে মৌমাছিকে ভীতসন্ত্রস্ত করে না তোলা এবং কোনো ধরনের রাসায়নিকসহ অন্যান্য ক্ষতিকর পদার্থ ব্যবহার না করা। তিনি জানান, মৌয়ালদের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য বনকর্মীরা টহলে থাকবে।