যুবলীগের নেতা খালেদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের আরেকটি মামলা
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/06/08/hl237fem.jpg)
অবৈধভাবে উপার্জিত সাড়ে আট কোটি টাকা তিন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডের তিন ব্যাংকে পাচারের অভিযোগে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া বিরুদ্ধে মামলা করেছে সিআইডি।
গতকাল রোববার সিআইডির পরিদর্শক ইব্রাহিম হোসেন মতিঝিল থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এই মামলা নিয়ে খালেদের বিরুদ্ধে মোট সাতটি মামলা দায়ের করা হলো, যার মধ্যে দুটি মামলা মুদ্রা পাচার আইনে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার বাদী ইব্রাহিম হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘খালেদের ব্যাপারে তদন্ত শুরু করে সিআইডি জানতে পারে তিনি মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুরে অর্থপাচার করেছেন। এবং তার প্রমাণ আছে আমাদের কাছে। তবে শুধু খালেদ নয়, একই মামলায় আইয়ুব রহমান, আবু ইউনুস ওরফে আবু হায়দার এবং দীন মজুমদার নামে তিনকে আসামি করা হয়েছে।’
ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘আইয়ুব রহমান যুবলীগের সাবেক নেতা খালেদের টাকা পাচারের বিষয়টি দেখতেন। আবু ইউনুস ছিলেন খালেদের ব্যবসায়িক পার্টনার। আর দীন মজুমদার পাচার হওয়া অর্থ ব্যাংকে জমা করতেন। তবে এখন আইয়ুব ছাড়া বাকি দুজন দেশের বাইরে পলাকত আছেন।’
এর আগে খালেদকে গ্রেপ্তারের সময় তাঁর কাছে ডলার ও নগদ টাকা পেয়েছিল র্যাব। তখনো তার বিরুদ্ধে ডিএমপির গুলশান থানায় মুদ্রা পাচার আইনে মামলা দায়ের করা হয়। তবে মুদ্রা পাচারের এই দুই মামলা ছাড়াও মতিঝিল থানায় খালেদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি, গুলশান থানায় অস্ত্র আইনে একটি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি এবং বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে আরো একটি মামলা চলছে তার বিরুদ্ধে।
মতিঝিল থানায় দায়ের করা সর্বশেষ মামলার এজাহারে বলা হয়, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া এবং অপর তিন আসামি পরস্পর যোগসাজশে অপরাধ, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ পাচার করেছেন। খালেদ কমলাপুরের রেলভবন, রাজউক, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, যুবভবন, কৃষিভবন, ঢাকা ওয়াসা, দক্ষিণ ঢাকা সিটি করপোরেশনের টেন্ডার নিজের তিনটি কোম্পানি ভূইয়া অ্যান্ড ভূইয়া ডেভেলপারস লিমিটেড, অর্ক বিল্ডার্স এবং অর্পণ প্রপার্টিজের মাধ্যমে ‘করায়ত্ব’ করেন।
এজাহারে আরো বলা হয়, মতিঝিল, কমলাপুর, খিলগাঁও, সবুজবাগ, মালিবাগ, শন্তিনগর এলাকায় অবৈধ মাছের বাজার, কোরবানির পশুর হাট, সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও গণপরিবহণ থেকে চাঁদা আদায়ের’ পাশাপাশি রেলওয়ের জমিতে অবৈধভাবে মার্কেট করে’ বিক্রি, ফকিরাপুলে ইয়ংম্যান্স ক্লাবে ক্যাসিনো চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া।
এছাড়া সিআইডি রাজধানীর শাহজাহানপুর, গুলশান এবং মোহাম্মদপুরে খালেদের তিনটি ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছে। খালেদ সিঙ্গাপুরে ‘অর্পণ ট্রেডার্স প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে একটি ইলেকট্রনিক্সের দোকানও খুলেছেন বলে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে।
গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ঢাকার ফকিরাপুল ইয়ংমেনস ক্লাবের অন্যতম কর্ণধারকে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। পরে যুবলীগ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়।