রফিকুল ইসলাম মাদানীর বিরুদ্ধে দুই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু
রাজধানীর মতিঝিল ও গাজীপুরের গাছা থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা দুই মামলায় ইসলামি বক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
আজ বুধবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেনের মতিঝিল থানার মামলার বাদী সৈয়দ আদনান ও গাজীপুর জেলার গাছা থানার মামলার বাদী র্যাব-১-এর নায়েব সুবেদার আব্দুল খালেক সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্য শেষে তাঁদের জেরা করেন মাদানীর আইনজীবীরা। এর পরে বিচারক আগামী ১৬ জুন পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছেন।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি নজরুল ইসলাম শামীম এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সাক্ষ্যগ্রহণে সময় মাদানীকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়, এর পরে তাঁকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়।
মাদানীকে গত বছরের ৭ এপ্রিল নেত্রকোনায় তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। আটককালে তাঁর কাছ থেকে চারটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এসব মোবাইলে বেশ কিছু বিদেশি পর্নোগ্রাফির ভিডিও পাওয়া যায়। আটকের পরদিন তাঁকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানায় হস্তান্তর করে র্যাব। পরে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
নথি থেকে জানা গেছে, গাজীপুর মহানগরীর বোর্ডবাজারের কলমেশ্বর এলাকায় একটি কারখানা চত্বরে গত ১০ ফেব্রুয়ারি এক ওয়াজ মাহফিলে সরকারকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দিয়েছিলেন মাদানী। ওই ঘটনায় ৭ এপ্রিল দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে গাছা থানায় র্যাব-১ এর ডিএডি আব্দুল খালেক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলায় রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৮ ও ৩১ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। যেখানে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও অনুভূতিতে আঘাত করে আক্রমণাত্মক ও মিথ্যা ভীতি প্রদর্শন; তথ্য-উপাত্ত ইলেকট্রনিক্স বিন্যাসে প্রকাশ ও সম্প্রচার করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটানোর অপরাধের কথা বলা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে গাজীপুরের গাছা ও বাসন থানা ছাড়াও ঢাকার তেজগাঁও থানায় মামলা রয়েছে।
এ ছাড়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরুদ্ধে গত ২৫ মার্চ বিক্ষোভকালে ঢাকার মতিঝিল এলাকা থেকে মাদানীকে আটক করেছিল পুলিশ। পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই ঘটনার মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়নি।
ওই সময় বিক্ষোভ ও হেফাজতে ইসলামের হরতাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছিল। মাদানীর ওয়াজে সহিংসতার উসকানি ছিল বলে দাবি করেছে র্যাব।
অপরদিকে, রাষ্ট্রবিরোধী ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে ২০২১ সালের ৮ এপ্রিল সৈয়দ আদনান শান্ত নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে মতিঝিল থানায় রফিকুল ইসলাম মাদানীসহ পাঁচজনকে আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি দায়ের করেন।
এ মামলায় ২০২১ সালের ১৯ অক্টোবর তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম ঢাকার সিএমএম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।