রাজপথে ডাইরেক্ট অ্যাকশন জরুরি : গয়েশ্বর
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায় ঘটাতে রাজপথে ডাইরেক্ট অ্যাকশন জরুরি মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, চাপে হোক আর স্বেচ্ছায় হোক, প্রচারযন্ত্র শেখ হাসিনা সরকারের এতো প্রচারের পরও তার (সরকার) উলঙ্গ চেহারা দেশের জনগণের কাছে সুস্পষ্ট। মানুষের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। আমাদের বক্তব্য মানুষ বোধ হয় আর শুনতে চায় না। সবাই চায় অ্যাকশন। যে অ্যাকশন করলে সরকারের বিদায় হবে, সব পর্যায়ের জনগণ রাজপথে নামবে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ বৃহস্পতিবার ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে’ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সমাবেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এসব কথা বলেন।
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, যেদিন দেশের উদ্দেশ্যে আমাদের নেতা তারেক রহমান যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন অতিক্রম করবেন, সেদিন দেশে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। কোনো সন্দেহ নেই, সেদিন তারেক রহমানের আসার খবরে ঢাকায় জনতার ঢল নামবে।
সংগঠনের দক্ষিণের সভাপতি এসএম জিলানীর সভাপতিত্বে ও উত্তরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিনের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম, ফজলুল হক মিলন, সরাফত আলী সপু, বিএনপির মহানগরের ইশরাক হোসেন, যুবদলের শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, গোলাম সরোয়ার, শাহাবুদ্দিন মুন্না, ইয়াসীন আলী, রেজওয়ানুল হক রিয়াজ, নজরুল ইসলাম।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আপনারা (নেতাকর্মী) যতই প্রতিবাদ করেন, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান আমার আপনার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতাদের কটূক্তি থামানো যাবে না। একটি মাত্র কাজ করলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সব থামবে তা হচ্ছে তাদের অবৈধ ক্ষমতা থেকে নামাতে হবে। এই অবস্থার থেকে পরিত্রাণের একটাই পথ শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে নামানো।
তিনি আরও বলেন, দেশের চলমান অবস্থা থেকে পরিত্রাণের একটাই পথ-সেটা হলো শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাকে থেকে নামানো। আপনারা বললেন, পদত্যাগ করেন কিন্তু যতক্ষণ নিঃশ্বাস আছে-করবে না। পদত্যাগের পাসপোর্ট উঠাতে হবে। এই পাসপোর্ট ওয়ালা কাজটাই এখন আমাদের জরুরি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, ভোটের দিন যদি কেউ তলোয়ার নিয়ে আসে তাহলে পাল্টা রাইফেল নিয়ে নামবেন। আমরা যদি তলোয়ার আর রাইফেলই হাতে নেই, তাহলে আবার নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করব কেনো, তার আগেই তো আপনাদেরকে বিদায় করতে পারি।
তিনি আরও বলেন, একটি সাংবিধানিক পদে থেকে সন্ত্রাসকে উসকানি দেওয়া, জনগণকে আতঙ্ক দেওয়া ভোটকেন্দ্র শূন্য রাখার একটি প্রয়াস মাত্র। এটা মনে করবেন না যে, না বুইঝা সে কথা বলেছেন, বুঝেই তিনি বলেছেন। আজকে আমাদের মূল দায়িত্বটা হলো এই সরকারকে বিদায় করা। রাজপথেই আমাদেরকে এর ফয়সালা করতে হবে। তাহলেই এসব পাগলামি দূর হবে।
গয়েশ্বর বলেন, অনেক উদ্ভট প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকারে এসে সর্বপ্রথম বললেন যে, বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুর বানাবেন। এখন বাংলাদেশটা আজিমপুর ধাক্কা খাইছে। সুতরাং সিঙ্গাপুর বানাতে গিয়ে দেশটাকে আজিমপুর বানিয়ে ফেলেছে। বিদ্যুত দেবো? ২৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ, আমাদের প্রয়োজন ১১ হাজার মেগাওয়াট। এখন বলছে তাও পাওয়া যাচ্ছে না। কুইক রেন্টালের নামে লাখ লাখ কোটি টাকা যে লুটপাট করেছে, এই টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। পদ্মা সেতুর স্টিমেট হয়েছিল ১১ হাজার কোটি টাকা, আজকে এই সেতু নির্মাণে কত টাকা ব্যয় হয়েছে, তা কিন্তু এখনো আমরা জানি না।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমার দেশে গ্যাসের দাম বাড়ে, গ্যাস দিতে পারে না। প্রতিবেশি দেশে গ্যাস রপ্তানি সৃষ্টি কইরা তিনি বইসা আছেন। আমার দেশের মানুষ শুষ্ক মৌসুমে পানি পায় না। অথচ ফেনী নদী পানি তাদের (ভারত) খাবার জন্য আমাদেরকে দিতে হয়। বর্ষা মৌসুমে যখন তাদের পানি বাড়ে তখন স্লুইস গেইট খুলে দিয়ে আমাদেরকে পানিতে ডুবিয়ে মারে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সরকারের বিদায় ঘটাতে হবে।