লকডাউন : পিটিয়ে কলেজশিক্ষকের হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ
চলমান ‘সর্বাত্মক লকডাউনে’ বাড়ির বাইরে বের হওয়ার এক কলেজশিক্ষকের হাত লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড) মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন আহত শিক্ষকের স্ত্রী বেবি খাতুন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে শিক্ষক আব্দুল আজিজের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এসিল্যান্ড।
আহত আব্দুল আজিজ পুঠিয়া উপজেলার সাধনপুর পঙ্গু ও শিশু নিকেতন ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক।
শিক্ষক আব্দুল আজিজের স্ত্রী বেবি খাতুন মুঠোফোনে সাংবাদিকদের জানান, তাঁর স্বামী ডায়েবেটিসে আক্রান্ত। এ কারণে নিয়মিত হাঁটতে হয়। গতকাল বিকেলে পাশের রাস্তায় হেঁটে এসে বাড়ির দরজার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। এ সময় লকডাউন অমান্যকারী বাজারের লোকজনকে ধাওয়া দেন এসিল্যান্ড মাহমুদুল হাসানসহ পুলিশের একটি দল। বাজারের লোকজনকে ধাওয়া দিতে গিয়ে শিক্ষক আব্দুল আজিজের বাড়ির সামনের রাস্তায় কাদার মধ্যে পা পিছলে পড়ে যান এসিল্যান্ড। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি উঠেই বাড়ির দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষক আব্দুল আজিজের হাতে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন।
বেবি খাতুন আরও অভিযোগ করেন, ‘বাজারের লোকজনকে ধরতে না পেরে আমার স্বামীকে হাতের কাছে পেয়েই তাঁকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেন এসিল্যান্ড মাহমুদুল হাসান।’
লাঠি দিয়ে মারার আগে এসিল্যান্ডকে নিজের পরিচয়ও দিয়েছিলেন শিক্ষক। এমন অভিযোগ করে বেবি খাতুন বলেন, ‘মারার পর তাঁর স্বামীকে ফেলে রেখে চলে যান এসিল্যান্ডসহ পুলিশের দলটি। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।’
এদিকে, ঘটনার পর গতকাল রাতে বাগমারা উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান তাঁর ফেসবুকে শিক্ষক আব্দুল আজিজের ছবিসহ ঘটনাটি তুলে ধরেন। ওই পোস্টে তিনি লিখেন, ‘বাগমারায় নিজ বাড়ির দরজায় অসুস্থ এক কলেজ শিক্ষককে লকডাউনের বিধিনিষেধের নামে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে এসিল্যান্ড মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে।’ তাঁর এই পোস্ট রাতেই ভাইরাল হয়ে পড়ে। যদিও পরে জিল্লুর রহমান সেই পোস্টটি তাঁর ফেসবুক থেকে সরিয়ে ফেলেন।
এসিল্যান্ড মাহমুদুল হাসান তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা ঘটার কোনো সুযোগ নাই। তবে যারা লকডাউন অমান্য করেছে, তাদের জরিমানা করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরিফ আহমেদ বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আমি শোনার পর পরই ওই শিক্ষকের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। তার বাসায়ও গিয়েছিলাম।’