লঞ্চ ভাড়া বাড়বে, চলবে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের ঘোষিত ১৮ দফা নির্দেশনা অনুযায়ী অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলবে লঞ্চ। এজন্য ভাড়াও বাড়বে। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। আজ বুধবার সচিবালয়ে ঈদ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বৈঠক শেষে নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘লঞ্চ মালিকরা বাসের মতো ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত জানাব। তবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে গেলে যাত্রী পরিবহণ কমাতে হবে। লঞ্চ মালিকরা আমাদের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে কতটুকু ভাড়া বাড়ানো যায় সেটি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্ত্রণালয়কে জানাবেন, আমরা সে আলোকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেব।’
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ গতবারের থেকে বেশি, যদি প্রয়োজন না হয় কেউ যেন স্থানান্তর না হন, স্বাস্থ্যবিধিটা যেন মেনে চলি। যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চে উঠতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে কোনো লঞ্চ ব্যত্যয় ঘটালে আমরা তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
প্রতিমন্ত্রী আজ নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে লঞ্চ, ফেরি ও স্টিমারসহ জলযান সুষ্ঠুভাবে চলাচল ও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সংক্রান্ত বৈঠকে বক্তব্য দেন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে, কিন্তু আন্তরিকতা ও চেষ্টার কোনো কমতি নেই। মানুষের কর্মচাঞ্চল্য বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা অনুযায়ী পরিবহণ সেক্টরে মানুষের সেবার ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন পাব। নতুন নতুন বাস, ট্রেন ও লঞ্চ পরিবহনে যুক্ত হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরো বাড়বে। সবার চেষ্টায় নৌপরিবহণ সেক্টরে সফলতার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাব।
বৈঠকে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, নৌপরিবহণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর আবু জাফর মো. জালাল উদ্দিন, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক উপস্থিত ছিলেন। সংশ্লিষ্টরা ভার্চুয়ালি বৈঠকে যোগ দেন।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে, করোনাভাইরাসজনিত রোগবিস্তার রোধে স্বাস্থ্য বিভাগের প্রণীত গাইডলাইন/স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করে সদরঘাটসহ অন্যান্য নৌবন্দরে যাত্রীসহ নৌযান পরিচালনার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে; লঞ্চের অনুমোদিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায়ে এবং নদীর মাঝপথে নৌকাযোগে যাত্রী উঠালে সংশ্লিষ্ট লঞ্চ মালিক/চালকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ; ঈদের আগে তিন দিন ও ঈদের পরে তিন দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় ও দ্রুত পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ব্যতীত সাধারণ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান ফেরিতে পারাপার বন্ধ রাখতে হবে; রাতের বেলায় সব ধরনের মালবাহী জাহাজ, বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। আগামী ১১ মে থেকে ১৭ মে পর্যন্ত দিনের বেলায় সব বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ রাখতে হবে; কোনো ক্রমেই লঞ্চের যাত্রী ও মালামাল ওভারলোড করা যাবে না; স্টিমার/লঞ্চ/স্পিডবোট থেকে নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা যাবে না।
সব যাত্রীবাহী নৌযানে সদরঘাটে ঈদের আগে পাঁচ দিন মালামাল/মোটর সাইকেল পরিবহণ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ এবং ঈদের পরে অন্যান্য নদী বন্দর থেকে আগত নৌযানে পাঁচ দিন মালামাল/মোটর সাইকেল পরিবহন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রাখতে হবে। রাতের বেলায় স্পিডবোট চলাচল বন্ধ করা। দিনের বেলায় স্পিডবোট চলাচলের সময় যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট পরিধান নিশ্চিত করতে হবে।