লটারির মাধ্যমে ভর্তি হওয়ায় কোচিং বাণিজ্য কমেছে : শিক্ষামন্ত্রী
লটারির মাধ্যমে ভর্তির ব্যবস্থা করায় কোচিং বাণিজ্য কমে এসেছে। এ বছরের মতো আগামীতেও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
আজ বুধবার বেলা সাড়ে ৩টায় রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ২০২২ শিক্ষাবর্ষে সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির ডিজিটাল লটারির উদ্বোধনী আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন।
কেন্দ্রীয়ভাবে সব মহানগর ও জেলা সদরের সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এ লটারির আয়োজন করা হয়। অবশিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যবস্থাপনা কমিটি নিজ নিজ উদ্যোগে লটারির আয়োজন করবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
লটারির মাধ্যমে ভর্তির ব্যবস্থা করার কারণ ব্যাখ্যা করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘গোটা শিক্ষা ব্যবস্থায় একটা সমতা আনতে আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছি। বিভিন্ন সময়ে নামি-দামি স্কুলে ভর্তি করার অসুস্থ প্রতিযোগিতা আমরা দেখেছি। আবার সেই ভর্তি করাতে গিয়ে অনেকে অনৈতিক পথ বেছে নিতে পিছপা হন না। বিভিন্ন ধরনের মেধার শিক্ষার্থীরা যখন একটি জায়গায় থাকে তখন সেটা শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো। প্রতিষ্ঠানের জন্যও ভালো। এসব বিষয় মাথায় রেখে, লটারির মাধ্যমে ভর্তি এবং ক্লাসের রোল নম্বর তুলে দিয়ে শিক্ষার্থীর ইউনিক আইডি করা হয়। এসব বিষয় চিন্তা করে আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছি।’
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর ভীষণ মানসিক চাপ থাকত। বাবা-মায়ের পছন্দের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে না পারলে প্রচণ্ড রকম মানসিক চাপের মধ্যে পড়ে। এটি শিক্ষার্থীদের শারীরিক, মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য কাম্য নয়, তার সঙ্গে কোচিং বাণিজ্যের একটি বড় ব্যাপার ছিল। ভর্তির কারণে কোচিং অনেকাংশে বন্ধ হয়েছে। তাই গত বছরের ধারাবাহিকতায় এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় আমরা ২০২২ সালের মতো আগামীতেও সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইন লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন করে ভর্তির উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’
শিক্ষামন্ত্রী জানান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন ৪০৫টি সরকারি বিদ্যালয়ে ৮০ হাজার ৯১টি শূন্য আসনের বিপরীতে মোট আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল পাঁচ লাখ ৩৮ হাজার ৬৬টি। লটারি উদ্বোধনের পর মাত্র আট মিনিট সাত সেকেন্ডের মধ্যে পুরো লটারির কাজটি সম্পন্ন হয়েছে। এর মাধ্যমে ৭৫ হাজার ৯৬৯ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার জন্য নির্বাচিত হয়েছে।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লটারি হবে আগামী ১৯ ডিসেম্বর। দুই হাজার ৯০৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসন সংখ্যা নয় লাখ ৪০ হাজার ৮৭৬টি। এর বাইরে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, তারা নিজেরাই তাদের লটারি করবেন। কিন্তু সেখানে আমাদের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবে। সেগুলো মূলত উপজেলা পর্যায়ে। তবে কোনো অবস্থাতেই পরীক্ষা নেওয়া যাবে না।
সরকারি স্কুলে ভর্তির লটারির ফলাফল জানবেন যেভাবে
‘সরকারি স্কুল ভর্তি ২০২২’ ফলাফল প্রকাশের পর ঘরে বসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফলাফল পেতে আপনার টেলিটক মোবাইল নাম্বার থেকে GSA <space> RESULT <space> USER ID লিখে পাঠিয়ে দিন ১৬২২২ নাম্বারে। SMS লেখার উদাহরণ: GSA RESULT DFSRESGSJD।
সরকারি স্কুলগুলোতে ১ম থেকে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি লটারির রেজাল্ট পাওয়া যাবে এই লিংকে : http://gsaresult.teletalk.com.bd