শরীয়তপুরে ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ ২১০ জন, ঘুরছেন বিদেশফেরতরা
শরীয়তপুরে বেড়ে চলেছে দেশে ফেরা প্রবাসীর সংখ্যা। প্রবাসীসহ করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২১০ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
প্রবাসীদের বেশিরভাগই ইতালি থেকে এসেছেন এবং যাদের বেশিরভাগই নড়িয়া উপজেলার বাসিন্দা। তবে ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ থাকা বিদেশফেরত বেশিরভাগ প্রবাসীই স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা মানছেন না। তারা বাড়িতে না থেকে হাটবাজারে ঘুরছেন, চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছেন আর মিশছেন বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে। প্রবাসীদের নিয়ে উদ্বিগ্ন তাদের পরিবার ও এলাকাবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইতালিতে করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া এবং দুজন ইতালিফেরত ব্যক্তির বাংলাদেশে এসে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবরে ইতালিতে অবস্থানরত প্রবাসীদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।
দেশে এসে এলাকায় বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ার কথা জানালেন সদ্য দেশে ফেরা কয়েকজন প্রবাসী। তাঁরা সুস্থ রয়েছেন। দেশের মাটিতে এসেছেন সুস্থ থাকার জন্য। তাদের অভিযোগ, ‘হোম কোয়ারেন্টিনের’ নামে তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করা হচ্ছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, শরীয়তপুরে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে গতকাল রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ২১০ জন প্রবাসী বাড়িতে এসেছেন। যাদের বেশির ভাগ ইতালি প্রবাসী। যারা এসেছেন তাদের স্বাস্থ্যগত অবস্থা এখনো ভালো রয়েছে তবে তারা পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। করোনাভাইরাস আক্রান্তদের জন্য আইসোলেশন ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতি ইউনিয়নে তিনজন স্বাস্থ্যকর্মীকে পর্যবেক্ষণ, নতুন প্রবাসী আগমন ও সার্বিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে অবহিত করার জন্য নিয়োগ করা হয়েছে।
শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন ডা. এস. এম. আব্দুল্লাহ্ আল মুরাদ বলেন, শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঁচ শয্যার ও প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঁচ শয্যার করে আইসোলেশন ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। এ ছাড়া কোয়ারেন্টিনে রাখার জন্য ১০০ শয্যা প্রস্তুত করার কাজ চলছে।
সিভিল সার্জন আরো বলেন, কোয়ারেন্টিনে রাখা প্রবাসীদের নিয়ে অনেক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর্মীরা নানা বিড়ম্বনার মুখোমুখি হচ্ছেন। তবে সব ধরনের বাধা অতিক্রম করে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা মাঠে থাকবেন।
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার এবং সচেতন হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, যেসব প্রবাসী স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা মানবেন না প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে ‘সংক্রমণ রোগ নিরোধ আইন’ প্রয়োগ করা হবে।