শিল্পপতি নুরুল ইসলাম বাবুলের মৃত্যুতে বিশিষ্টজনদের শোক
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/07/13/babul.jpg)
যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুলের মৃত্যুতে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পাশাপাশি বিশিষ্টজনেরা শোক প্রকাশ করেছেন। তাঁরা এই বীর মুক্তিযোদ্ধার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেন।
যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যানের মৃত্যুতে বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো) এবং এডিটর গিল্ডের পক্ষ থেকেও শোক প্রকাশ করা হয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর বেসরকারি এভার কেয়ার (সাবেক অ্যাপোলো) হাসপাতালে নুরুল ইসলাম বাবুল (৭৪) মারা যান। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও তিন মেয়ে রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে দেশের শিল্প খাতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বিকেলে যমুনা গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামীকাল মঙ্গলবার বাদ জোহর যমুনা ফিউচার পার্ক মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে নুরুল ইসলাম বাবুলের লাশ দাফন করা হবে।
দেশের বিশিষ্ট এই শিল্পপতির মৃত্যুতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম শোক প্রকাশ করেছেন।
বিকেলে এক বিবৃতিতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আলাদা এক বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
এ ছাড়া জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জি এম কাদের এমপি, জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্টপোষক ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন।
নুরুল ইসলাম বাবুলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বরেণ্য এই শিল্পপতি দৈনিক যুগান্তর ও যমুনা টেলিভিশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যমুনা ফিউচার পার্কও এই শিল্পগোষ্ঠীর অন্যতম স্থাপনা। তিনি ১৯৭৪ সালে যমুনা গ্রুপ প্রতিষ্ঠার পর একে একে গড়ে তুলেছিলেন অন্তত ৩৮টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান; যেখানে কর্মসংস্থান তৈরি করেছিলেন হাজার হাজার মানুষের। যমুনা গ্রুপ দেশের ইলেট্রনিক্স, বস্ত্র, ওভেন গার্মেন্টস, রাসায়নিক, চামড়া, মোটরসাইকেল, বেভারেজ টয়লেট্রিজ, নির্মাণ এবং আবাসন খাতের ব্যবসায় শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছিল।
গত ১৪ জুন নুরুল ইসলাম বাবুলের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। ওই দিনই তাঁকে এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। করোনায় তাঁর কিডনি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বলে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
বিশিষ্ট এই শিল্পোদ্যোক্তার চিকিৎসায় এভার কেয়ারের চিকিৎসক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মাহমুদের নেতৃত্ব ১০ সদস্য বিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। এর বাইরে চীনের চারজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং সিঙ্গাপুরের মাউন্ড এলিজাবেথ হাসাপাতালের দুজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু সবার চেষ্টা ব্যর্থ করে পরপারে পাড়ি জমান খ্যাতনামা এই শিল্পপতি।
নুরুল ইসলাম বাবুলের জন্ম ১৯৪৬ সালে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার চুড়াইন ইউনিয়নের কামারখোলা গ্রামে। তাঁর স্ত্রী সালমা ইসলাম সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এবং বর্তমান জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য। ছেলে শামীম ইসলাম যমুনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মেয়ে রোজালিন ইসলাম, মনিকা ইসলাম ও সনিয়া ইসলাম যমুনা গ্রুপের পরিচালক।