শ্রম অধিকার বাস্তবায়নে কাজ করতে চায় বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র : সালমান এফ রহমান
শ্রম অধিকার বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র একযোগে কাজ করতে চায় বলে শ্রমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের এক ভার্চুয়াল বৈঠকে আশা ব্যক্ত করেছে দুদেশ। আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান শ্রম খাতে বর্তমান সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, ‘বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার শ্রম অধিকার বিষয়ক সুপারিশগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে।’
এ সময় শ্রম আইন ও ইপিজেড আইনসহ সংশ্লিষ্ট বিধি বিধানের সংশোধন ও আন্তর্জাতিক শ্রম কনভেনশনগুলো অনুস্বাক্ষরের বিষয়ও তুলে ধরেন সালমান এফ রহমান।
সভায় মার্কিন দলনেতা ফার্নান্ডেজ বাংলাদেশের শ্রম খাত উন্নয়নে গৃহীত পদক্ষেপসমূহের প্রশংসা করেন এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সুপারিশসমূহের পূর্ণ বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
এ ছাড়া সালমান এফ রহমান বাংলাদেশের শ্রম খাতের অধিকতর উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান ও এক সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
শ্রম সচিব বিগত এক দশকের বেশি সময়ে শ্রম খাতে বর্তমান সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলোর সুফল সম্পর্কে সভায় অবহিত করেন। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল শ্রম আইন ও বিধি সংশোধন এবং ট্রেড ইউনিয়নের নিবন্ধন বিষয়ে তাদের পর্যবেক্ষণগুলো তুলে ধরেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদানের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার আহ্বান জানান। তিনি স্বল্পোন্নত দেশ হতে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবার সন্ধিক্ষণে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ ছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি যুক্তরাষ্ট্র থেকে পরিচালিত আন্তর্জাতিক আর্থিক উন্নয়ন করপোরেশনের সহযোগিতা লাভের বিষয়ে আলোকপাত করেন।
সমাপনী বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর সহকারী সচিব ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন এবং শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠা ও বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে জানান।
পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশ শ্রম অধিকার রক্ষায় তার করণীয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ সজাগ এবং সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংস্কারসহ সকল কার্যক্রম অব্যহত রেখেছে।’ তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব আরও জোরাল করার বিষয়ে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে পররাষ্ট্র সচিব (জ্যেষ্ঠ সচিব) মাসুদ বিন মোমেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহছানে এলাহী, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া, বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন, বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান প্রমুখ।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জ্বালানি ও পরিবেশবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জোসে ফার্নান্ডেজের নেতৃত্বে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর সহকারী সচিব ডোনাল্ড লু, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ৩৪ সদস্যের একটি দল বৈঠকে অংশ নেয়।