সাতক্ষীরায় মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে কাঁদলেন মা-বাবা
‘জামাইয়ের প্রথম স্ত্রীকে বাড়ি আনতে হলে পথের কাঁটা আমার মেয়েকে সরিয়ে দিতে হবে। তা না হলে মুম্বাই থেকে প্রথম স্ত্রী আসমা খাতুন ফিরে আসবে না।’
আজ রোববার কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ইন্দিরা গ্রামের নিহত গৃহবধূ শম্পা খাতুনের বাবা বাবলু সরদার ও মা হালিমা খাতুন।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার এই ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে রাজনগর গ্রামের নিহত শম্পা খাতুনের বাবা বাবলু সরদার বলেন, জামাই হবিবর একজন নেশাখোর। সে মাদক কারবার করে। আর ঘরে এসে আমার মেয়েটাকে মারধর করে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মেয়েটি প্রায়ই আমার বাড়ি চলে আসত। পরে আবারও তার চার বছরের সন্তানসহ ফিরে যেত। কিন্তু সেদিনের যাওয়াই তার শেষ যাওয়া।
বাবুল সরদার আরও বলেন, হবিবরের প্রথম স্ত্রী আসমা খাতুন মুম্বাইয়ে থাকে। এটা না জেনেই আমি তার সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম। এখন জানতে পারছি। আসমা খাতুন দেশে ফিরে আসবে। তাই পথের কাঁটা আমার মেয়ে শম্পা বেগমকে সরিয়ে দিতে হবে।
বাবুল সরদার সাংবাদিকদের জানান, ছয় বছর আগে বিয়ে হওয়ার পর থেকে তাদের মেয়েটিকে নানাভাবে নির্যাতন করতেন জামাতা হবিবর রহমান। তারা কিছু টাকাপয়সা দিয়ে জামাতার মন রক্ষার চেষ্টাও করতেন। কিন্তু তা পারেননি। গত ১৮ এপ্রিল রাতে তাদের মেয়ে শম্পাকে শ্বাসরোধ করে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে তার মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে প্রচার করে শম্পা আত্মহত্যা করেছেন।
বাবুল সরদার বলেন, আমার মেয়ের গলায় ছিল ফোলা দাগ। কপালে ছিল আঘাতের চিহ্ন। আমি সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা দিয়েছি। আমি অশিক্ষিত মানুষ। পুলিশ কী লিখে নিয়েছে, আমি জানি না। এখন পুলিশ বলছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত আসামি হবিবরসহ কাউকে ধরা যাবে না। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। এই হত্যায় জড়িতদের ফাঁসি চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, শম্পার মৃত্যুর বিষয়ে একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত এটি হত্যা না আত্মহত্যা, তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। হত্যার ঘটনা হয়ে থাকলে অবশ্যই আমরা আসামিকে ধরে আনব এবং আইনে সোপর্দ করব।