সাবেক স্ত্রীকে ফিরে পেতে এ কেমন নির্মম কৌশল!
ঝিনাইদহের সদর উপজেলায় দুই শিশু সন্তানকে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে সাবেক স্ত্রীকে পাঠানোর অভিযোগে হাবিবুর রহমান শিমুল (৩৮) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার ধানহাড়িয়া গ্রাম থেকে শিমুলকে আটক করা হয়।
পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান এ খবর নিশ্চিত করে বলেন, ‘শিশু নির্যাতনের মতো ভয়ঙ্কর অপরাধের সঙ্গে জড়িত ওই বাবার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
ঝিনাইদহ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এমদাদুল জানান, ২০০৬ সালে জেলা শহরের আরাপুর সোনালীপাড়া গ্রামের শিরিন সুলতানা মিনিকে ভালোবেসে বিয়ে করেন হাবিবুর রহমান শিমুল। এরপর তাদের দুই সন্তান আশিকুর রহমান এবং তৌশিকুর রহমানের জন্ম হয়। দুই বছর আগে সন্তানদের রেখে স্বামীকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান মিনি।
এদিকে স্ত্রীকে ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে উঠে হাবিবুর রহমান শিমুল। কোনো ফন্দি-ফিকিরে কাজ হয়নি। অবশেষে দুই ছেলেকে চেয়ারে বেঁধে বেদম প্রহার করেন। সাবেক স্ত্রীকে ফিরে পেতে শিমুল নির্যাতনের সেই দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে পাঠিয়ে দেন সাবেক স্ত্রী মিনির কাছে। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন শিশু দুটির মা মিনি। একপর্যায়ে ভিডিও নিয়ে পুলিশের কাছে সাহায্যের জন্য ছুটে যান মা মিনি। নজর কাড়ে পুলিশের। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নির্যাতনের সেই ভিডিও দেখেন পুলিশ সুপারসহ থানার পুলিশ প্রশাসনের অনেকে। এরপর ওই দুই শিশুকে উদ্ধার এবং আটক করা হয় অমানবিক পিতা হাবিবুর রহমান শিমুলকে।
এদিকে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সন্তানদের নির্যাতনের ঘটনা স্বীকার করেছেন শিমুল। অসহায় দুই শিশুর কথা ভেবে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে পুনরায় বন্ধন গড়ে তুলতে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা কয়েক ঘণ্টা চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। কোনো অবস্থায় সাবেক স্বামীর কাছে ফিরে যেতে রাজি হননি মিনি।
শিমুলের সাবেক স্ত্রী মিনি পুলিশকে জানান, বাবার একমাত্র ছেলে শিমুল অনেক আগে থেকেই বেকার। বিয়ের পর থেকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে স্বামীকে তালাক দিয়ে বাবার কাছে চলে যান মিনি। সেখানে নতুন করে পড়ালেখা শুরু করেছেন।
জানা গেছে, শিরিন সুলতানা মিনি বাদী হয়ে সাবেক স্বামী হাবিবুর রহমান শিমুলের বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতন আইনে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি মামলা করেছেন।
এদিকে, নির্যাতনের শিকার দুই শিশু থানায় একসঙ্গে বসে থাকলেও মায়ের কাছে ফিরে যেতে রাজি হয়নি। অবশেষে দাদা ও দাদির জিম্মায় তাদের দেওয়া হয়েছে।