সাবেক হুইপ আবদুর রউফের নবম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া
ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের সর্বদলীয় ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক হুইপ আবদুর রউফের নবম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ২৯ নভেম্বর। ২০১১ সালের এই দিনে ঢাকার একটি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন।
আবদুর রউফের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মরহুমের গ্রামের বাড়ি নীলফামারীর ডোমার উপজেলার বাগডোকরা গ্রামের হাজীবাড়ি জামে মসজিদে আজ রোববার বাদ আসর দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়। এতে মরহুমের আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামের লোকজন অংশ নেন। তাঁরা মরহুম আবদুর রউফের রুহের মাগফিরাত চেয়ে মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন।
আবদুর রউফ ১৯৬৩-৬৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৮-৬৯ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্রলীগ তথা ছাত্রসমাজের পক্ষে তিনি নিজ হাতে ১১ দফা দাবি খসড়া চূড়ান্ত করেছিলেন।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে আবদুর রউফ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য (এমএনএ) নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে তিনি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ অংশগ্রহণ করেন। সেইসঙ্গে ৬ নম্বর সেক্টরে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৪ এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকাররা এই মুক্তিযুদ্ধ সংগঠকের গ্রামের বাড়িসহ বাগডোকরা গ্রাম পুড়িয়ে দেয়। হানাদার বাহিনী তাঁর বাবা হাজি আজিজ উল্ল্যা সরকারের ওপর আক্রমণ চালায় এবং নির্যাতিত অবস্থায় ১৯৭১ সালের ২৯ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আবদুর রউফ ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর পার্লামেন্টে আবদুর রউফকে ডেপুটি চিফ হুইপের দায়িত্ব দেন।
আবদুর রউফ নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসন থেকে তিনবার আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে তিনি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামে যোগ দেন এবং সভাপতিমণ্ডলীল সদস্য থাকাবস্থায় ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর ইন্তেকাল করেন। এর আগে ২০০৭ সালের ১০ সেপ্টেম্বর আবদুর রউফের স্ত্রী আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদিকা ফরিদা রউফ আশা ইন্তেকাল করেন।