সিনহা হত্যা মামলা : দ্বিতীয় দফার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মুহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার দ্বিতীয় দফার সাক্ষ্যগ্রহণ আজ রোববার শুরু হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানিয়েছেন, আজ সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য পাঁচ সাক্ষীকে আদালতে রাখা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাঁদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করার জন্য চেষ্টা করা হবে। এই সাক্ষ্যগ্রহণ চলবে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
এর আগে ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত টানা তিন দিন মামলার ১ নম্বর সাক্ষী ও বাদী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস ও ২ নম্বর সাক্ষী সাহেদুল ইসলাম সিফাতের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেন আদালত।
এদিকে, সকাল থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের কড়া নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে টেকনাফ মডেল থানার বরখাস্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপসহ অন্য আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়।
গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মুহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনায় সে সময় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লিয়াকত আলীকে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে র্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়।
অন্যদিকে ঘটনার পরপর পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি ও রামু থানায় আরেকটি মামলা করে।
সিনহা নিহতের ছয় দিন পর লিয়াকত আলী ও ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার অভিযোগে টেকনাফ থানায় পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টে ঘটনার সময় দায়িত্ব পালনকারী আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গত ২৪ জুন মামলার অন্য পলাতক আসামি টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেব আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
আসামিদের মধ্যে ওসি প্রদীপ, কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও সাগর দেব ছাড়া অন্য ১২ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
তদন্ত শেষে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও তৎকালীন র্যাব ১৫-এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাস ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
মামলার আসামিরা হলেন—বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের সাবেক পরির্দশক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল-মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, এপিবিএনের তিন সদস্য এসআই মোহাম্মদ শাহজাহান, কনস্টেবল মোহাম্মদ রাজীব ও মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, পুলিশের মামলার তিন সাক্ষী নুরুল আমিন, নেজাম উদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াজ এবং টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও সাগর দেব।
গত ২৭ জুন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচার মোহাম্মদ ইসমাইল মামলার অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।