সিলেটে ‘স্ত্রীসহ দুই সন্তানকে হত্যা করেছেন হিফজুল নিজেই’, থানায় মামলা
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দিতে মা ও দুই শিশু সন্তানকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। গোয়াইনঘাট থানায় গতকাল বুধবার রাতে মামলাটি করেন নিহত নারীর বাবা আইয়ুব আলী। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করেছেন তিনি।
নিহত নারীর স্বামী হিফজুর রহমান এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে পুলিশ। তবে, হিফজুর বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।
নিহতরা হলো হিফজুর রহমানের স্ত্রী আলেমা বেগম, ছেলে মিজানুর রহমান (১১) ও মেয়ে তানিশা রহমান (৫)।
এদিকে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) দিলিপ কুমার দাশকে।
গোয়াইনঘাট থানার ওসি আব্দুল আহাদ জানান, মামলাটিকে গুরুত্ব দিয়ে দিনভর কাজ করছে পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডে হিফজুরের জড়িত থাকার বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত বলে দাবি করছেন তিনি। ওসি আরও জানান, হিফজুর লাউপাতা দিয়ে বটি ধরে এ হত্যাকাণ্ড চালান, যাতে তাঁর হাতের ছাপ না থাকে। মানসিকভাবে সুস্থ অবস্থায়ই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন তিনি। হিফজুরের স্ত্রী ও সন্তানদের শরীরে আঘাতের চিহ্নের তুলনায় হিফজুরের শরীরের আঘাত খুবই নগন্য। তাঁকে হাসপাতালে আটক হিসেবে রাখা হয়েছে, এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। পারিবারিক কলহ থেকে তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।
এদিকে, হাসপাতালে দেখা গেছে, ‘হিফজুর চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশের উদ্দেশে বিলাপ করে বলছেন, ‘আমাকে হ্যান্ডকাফ পরান।’ তবে ওসি আব্দুল আহাদ বলছেন, নিজেকে মানসিকভাবে অসুস্থ প্রমাণ করার ভান করছেন হিফজুর। এ জন্যেই এমন আচরণ করছেন।
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় একটি বাড়ি থেকে গতকাল বুধবার সকালে আলেমা বেগম, তাঁর ছেলে মিজানুর রহমান ও মেয়ে তানিশা রহমানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি গ্রাম থেকে লাশ তিনটি উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া নিহত নারীর স্বামী হিফজুরকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গোয়াইনঘাট থানার ওসি আব্দুল আহাদ জানান, বুধবার সকালে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে হিফজুর রহমানের বসতঘর থেকে আহত অবস্থায় তাঁকে ও গলাকাটা অবস্থায় তাঁর স্ত্রী আলেমা, ছেলে মিজান ও মেয়ে তানিশার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আহত হিফজুর রহমানকে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।