সুনামগঞ্জে হাছন রাজার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা
মরমি কবি দেওয়ান হাছন রাজা। জন্ম ২১ ডিসেম্বর ১৮৫৪ সালে এবং মৃত্যু ৬ ডিসেম্বর ১৯২২ সালে। উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি ছিলেন একজন জমিদার। যাঁর কাজে ও নামে রাজা যুক্ত থাকলেও রাজকীয় ভাবনার বাইরে গিয়ে তিনি ছিলেন আপাদমস্তক একজন সংস্কৃতিমনা মানুষ। লিখে গেছেন অসংখ্য আধ্যাত্মিক গান। সহজ-সরল ভাষায় নিজেও গেয়ে গেছেন বাংলার মানুষের গান। তাঁর গান এখন বিশ্বজুড়ে প্রচলিত। তিনি সুনামগঞ্জ তথা বাংলাদেশের সম্পদ।
কিন্তু, বরাবরের মতো সুনামগঞ্জে এ গুণী মানুষের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের জোর দাবি থাকলেও তেমন কোনো আয়োজন দেখা যায় না। তবে, কয়েক বছর ধরে নিজস্ব উদ্যোগে প্রত্যেক বছর হাছন রাজার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে সুনামগঞ্জের হাছন রাজা ট্রাস্ট।
মরমি কবি দেওয়ান হাছন রাজার ১৬৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার সকাল ৯টার দিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাছন রাজা মিলনায়তনে হাছন রাজা ট্রাস্টের আয়োজনে ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
হাছন রাজা ট্রাস্টের সভাপতি দেওয়ান ইমদাদ রেজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জয়নাল আবেদিন।
পরে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন হাছন রাজা ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান সাজাউর রাজা চৌধুরী সুমন, সরকারি এস সি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজ মাশহুদ চৌধুরী, দৈনিক সুনামগঞ্জের খবরের সম্পাদক পঙ্কজ দে, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সহ-সম্পাদক দেবদাস চৌধুরী রঞ্জন, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অলক ঘোষ চৌধুরী, অঞ্জন চৌধুরী, সংগীত শিল্পী রূপশ্রী রায়, সোমা সাহা, মো. সোহেল রানা, অ্যাডভোকেট মাহবুবুল হক শাহীন, হাছন রাজার জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক দেওয়ান গিয়াস চৌধুরীসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।
প্রতিযোগিতায় হাছন রাজার গান, গানের সঙ্গে নৃত্য ও হাছন রাজার সৃষ্টিকর্ম নিয়ে চিত্রাঙ্কন বিষয়ে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।
হাছন রাজা ট্রাস্টের সভাপতি দেওয়ান ইমদাদ রেজা চৌধুরী বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চেষ্টা করি, নতুন প্রজন্মের সামনে হাছন রাজার সৃষ্টিকর্ম তুলে ধরতে। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শুদ্ধভাবে হাছন রাজার গান গাওয়ার চেষ্টা করে। ট্রাস্ট প্রতি বছর আয়োজন করছে, সামনেও এ পরিবারের নিজস্ব অর্থায়নে আরও আয়োজন করবে।’ সরকার ও প্রশাসনের কাছে তিনি দাবি জানান, হাছন রাজার সৃষ্টিকর্মকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে একাডেমির বিকল্প নেই।