‘সৈয়দ আশরাফ সৎ ও আদর্শের রাজনীতি করে গেছেন’
আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর কবরে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যেরা।
রাজধানীর বনানী কবরস্থানে আজ রোববার সকাল ৮টায় সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তাঁর বোন ও কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা জাকিয়া নূর। এ সময় কিশোরগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। তবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের কোনো নেতা শ্রদ্ধা জানাতে যাননি।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কবরে শ্রদ্ধা জানানোর পর সৈয়দা জাকিয়া নূর আগামী প্রজন্মকে তাঁর ভাইয়ের জীবনাদর্শ থেকে রাজনীতির শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানান।
সৈয়দা জাকিয়া নূর বলেন, ‘আমার ভাই সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সৎ ও আদর্শের রাজনীতি করে গেছেন। আগামী প্রজন্মের কাছে আমার এটাই আবেদন থাকবে যে, আমার ভাই সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে (তারা) যেন সৎ ও আদর্শের রাজনীতি করে।’
ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি ব্যাংককের একটি হাসপাতালে মারা যান সৈয়দ আশরাফ। জাতীয় চার নেতার অন্যতম এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন সৈয়দ আশরাফের বাবা।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে বাবা সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর সৈয়দ আশরাফ যুক্তরাজ্য চলে যান। প্রবাসজীবনে তিনি যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
আশরাফুল ইসলাম ১৯৯৬ সালে দেশে ফিরে আসেন এবং কিশোরগঞ্জ সদর আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় তিনি নির্বাচিত হন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৮ সালের নির্বাচনেও সৈয়দ আশরাফ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি এক কন্যার জনক। তাঁর স্ত্রী শিলা ইসলাম ২০১৭ সালের অক্টোবরে মারা যান।
সৈয়দ আশরাফ ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা সৈয়দ নজরুল ইসলাম ১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ছিলেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অন্যতম সংগঠক ছিলেন। সৈয়দ আশরাফ ছাত্রজীবনে ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহপ্রচার সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
আশরাফুল ইসলাম ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশ নেন। তিনি মুক্তিবাহিনীর একজন সদস্য ছিলেন। ভারতের দেরাদুনে তিনি প্রশিক্ষণ নেন।