বালাগঞ্জের ৭২ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬২টিতেই নেই শহীদ মিনার

সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার ৭২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬২টিতেই নেই শহীদ মিনার।
বালাগঞ্জের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে, শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
উপজেলার হামছাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিত্তে জালালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চান্দাইরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মনোহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আহমদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ গহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, করচারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নূতন সুনামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পশ্চিম ডেকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়া বাকি ৬২ বিদ্যালয়ে এখনো নির্মিত হয়নি শহীদ মিনার।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনে বাংলা ভাষার জন্য আত্মোৎসর্গ করেছিলেন যারা, তাদের স্মরণে ঢাকায় নির্মিত হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে দেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়।
বালাগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সদস্য ও দেওয়ানবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুল আলম বলেন, `স্বাধীনতার অর্ধশত বছর পেরিয়ে গেলেও বালাগঞ্জের বেশির ভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রাথমিক বিদ্যালয় শিশুদের শিক্ষাজীবনের প্রথম ধাপ। এখান থেকে যদি ভাষা শহীদদের প্রতি শিক্ষার্থীদের সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ না আসে তাহলে বড় হয়ে তারা এসবকে গুরুত্বহীন মনে করবে। তাই বালাগঞ্জের প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরকারি উদ্যোগে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।’
মৈশাসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল ওয়াহিদ বলেন, শহীদ মিনার না থাকায় অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই বাঁশ ও কলাগাছ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা খুবই জরুরি।
জানা গেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা ও আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে গড়ে উঠছে না শহীদ মিনার। শহীদ মিনার না থাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২১ ফেব্রয়ারি, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসসহ জাতীয় দিবসগুলোতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারে না শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে কথা বলতে বালাগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রকিব ভূইয়ার মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভাপতি সুজিত কুমার চন্দ বলেন, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই শহীদ মিনার নির্মাণ আবশ্যকীয়। বালাগঞ্জের যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই সেগুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণে আমি উদ্যোগ নিয়েছি। ইতিমধ্যেই একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছে। উপজেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতে শহীদ মিনার নির্মিত হয় এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেব।’