‘স্বপ্নবাজ’ মেয়র আনিসুল হকের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2019/11/30/anisul-haque9_0.jpg)
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রথম নির্বাচিত মেয়র আনিসুল হকের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ শনিবার। ২০১৭ সালের এই দিনে লন্ডনের ওয়েলিংটন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
ডিএনসিসির মেয়র হিসেবে মাত্র দুই বছর দুই মাস ২৪ দিন দায়িত্ব পালন করেন আনিসুল হক। এই স্বল্প সময়ে তিনি ঢাকাবাসীকে দেখিয়েছিলেন বিশ্বমানের ‘স্মার্ট’ নগরী গড়ার স্বপ্ন। ঢাকাকে আধুনিক এবং বসবাসের উপযোগী করতে নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেন তিনি।
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2019/11/30/annisul_2.jpg 644w)
রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে মেয়র আনিসুল হক বলেছিলেন, ‘মানুষ পারে না এমন কিছু নেই। মানুষের জন্যই বলা হয়, মানুষ স্বপ্নের সমান বড়। মানুষ কখনো কখনো স্বপ্নের চাইতেও বড়।’
তাই হয়তো মেয়র আনিসুল হক আকাশছোঁয়া স্বপ্ন দেখতেন। তিনি শুধু স্বপ্নই দেখতেন না, স্বপ্ন বাস্তবায়নও করতেন। অপরকেও দেখাতেন স্বপ্ন। মেয়র থাকাকালীন সময়ে তিনি নানা সাহসী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। দল-মত নির্বিশেষে কুড়িয়েছিলেন প্রশংসা। ঢাকাবাসীকে উপহার দিতে চেয়েছিলেন একটি স্মার্ট নগরী। সেই স্বপ্ন নিয়ে তিনি কাজও শুরু করেছিলেন।
মৃত্যুর আগে মেয়র হিসেবে কাজ করার জন্য কম সময় পেলেও রাস্তা-ফুটপাতসহ অবৈধ বহু স্থান দখলমুক্ত করেছিলেন মেয়র আনিসুল। শুরু করেছিলেন নানামুখী উন্নয়নকাজ। দীর্ঘ ৫০ বছর দখলে থাকা তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তার সামনের ট্রাকস্ট্যান্ডের সড়কটি উদ্ধার করে এলাকাটি যানজটমুক্ত করেন তিনি। এ ছাড়া গাবতলী বাসস্ট্যান্ডের সামনের দখলে থাকা প্রায় ৪২ একর জমি উদ্ধার করেন। এর ফলে গাবতলী এলাকার যানজট অনেকাংশে কমে যায়।
নগরবাসীকে স্মার্ট নগরী উপহার দিতে আনিসুল হক রাজধানীর আনাচে-কানাচে থাকা নাগরিক সমস্যা জানতে ‘নগর’ নামে একটি এনড্রয়েড অ্যাপ বানান প্রয়াত মেয়র। এর মাধ্যমে নাগরিকরা সংশ্লিষ্ট এলাকার সমস্যাগুলো সিটি করপোরেশনকে ছবিসহ পাঠাতে পারতেন। অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোরে যুক্ত হওয়ার পর আলোড়ন তোলে।
প্রয়াত মেয়র অনিসুল হক ২০১৭ সালের ২৯ জুলাই ব্যক্তিগত সফরে সপরিবারে লন্ডন যান। সেখানে তিনি সেরিব্রাল ভাসকুলাইটিসে (মস্তিষ্কের রক্তনালির প্রদাহ) আক্রান্ত হলে ১৩ আগস্ট স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৩০ নভেম্বর লন্ডনের ওয়েলিংটন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
আনিসুল হকের জন্ম নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ১৯৫২ সালে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক (সম্মান) ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। আশির দশকে টেলিভিশন উপস্থাপক হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘আনন্দমেলা’ ও ‘অন্তরালে’ নামে দুটি অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করতেন। আনিসুল হক একজন সফল ব্যবসায়ীও। ১৯৮৬ সালে তার নিজস্ব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ‘মোহাম্মদী গ্রুপ’ প্রতিষ্ঠা করেন।
এ ছাড়া ২০০৫ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিজিএমইএর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সার্ক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বিআইপিপিএরও সভাপতি ছিলেন।