স্বল্প রোজগেরে নজরুলের ঘরে আশার আলো হীরামনি
নাম ‘হীরামনি’। ঠিক যেন আসল হীরার মতোই উজ্জ্বল সে। বাবা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী অভাবী মানুষ। অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরে হীরামনি এবারের এসএসসিতে পেয়েছে জিপিএ-৫।
তবে সৃষ্টিকর্তা তার বাবা নজরুল ইসলামের দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নিলেও দিয়েছেন অসাধারণ সুরেলা গলা। একটা সময় দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে দিন চালালেও বর্তমানে হাটবাজারে গান শুনিয়ে যা রোজগার হয় তাই দিয়ে সংসার চালান। স্বল্প রোজগারের টাকা দিয়ে এসএসসি পাস করিয়েছেন যমজ দুই মেয়েকে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম (৪৫)। তিনি জন্মগত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। আগে ভিক্ষা করে অথবা এলাকাবাসীর দান খয়রাতে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ১৯৯৫ সালে সাতক্ষীরায় আসা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিনামূল্যে ডান চোখটি অপারেশন করিয়েছিলেন। অপারেশনের পর চোখে সামান্য জ্যোতি এসেছে। এরপর থেকে গ্রামেগঞ্জে ভ্যানে করে গান শুনিয়ে যা রোজগার করেন তা দিয়েই কোনোরকমে দিন চলে তার।
তার এ কাজের জন্য একজোড়া করতাল, একটি সাউন্ডবক্স ও একটি মাইক্রোফোন কিনেছেন নজরুল। প্রতি তিন মাস পরপর প্রতিবন্ধী ভাতা পান ২,২৫০ টাকা। এভাবে পরিশ্রম করে যমজ দুই মেয়ে ‘হীরামনি’ ও ‘মুক্তামনি’কে গত বছর এসএসসি পাস করিয়েছেন। এদের মধ্যে হীরামনি এ প্লাস পেয়েছে আর মুক্তামনি পেয়েছে এ গ্রেড। ছোট ছেলে আরাফাতকে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াচ্ছেন।
হীরামনি ও মুক্তামনি বর্তমানে শহীদ স্মৃতি ডিগ্রী কলেজে বাণিজ্য বিভাগে পড়াশুনা করছেন। তারা এগিয়ে যেতে চায় আরও অনেকদূর।