স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে খুলল চট্টগ্রামের বিনোদনকেন্দ্র
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল সারা দেশের বিনোদনকেন্দ্রগুলো। এখন ধীরে ধীরে সেগুলো খুলে দেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে প্রায় পাঁচ মাস পর গত সোমবার কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতসহ কিছু পর্যটনকেন্দ্র সীমিত আকারে খুলে দেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার স্বাস্থ্যবিধি মানার কিছু শর্ত দিয়ে খুলে দেওয়া হলো বন্দরনগরীর বিনোদনকেন্দ্রগুলো। কর্তৃপক্ষ যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে এজন্য নিয়মিত পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, ফয়’স লেক, বাটারফ্লাই পার্ক, চিড়িয়াখানা ও শিশুপার্কসহ বেশকিছু সরকারি-বেসরকারি বিনোদনকেন্দ্র রয়েছে চট্টগ্রামে। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার দুদিন পরে অর্থাৎ ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় এসব বিনোদনকেন্দ্র। সম্প্রতি প্রশাসনের সঙ্গে বিনোদনকেন্দ্রগুলোর কর্তৃপক্ষের আলোচনার পর সেগুলো শর্ত সাপেক্ষে চালু করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় জেলা প্রশাসন।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘একটি টিম পুরো বিষয়টি মনিটরিং করবে। টিম যদি মনে করে যে, বিনোদন কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না, অবহেলা করছে তাহলে মনিটরিং টিম বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ করে দিতে পারবে।’
দীর্ঘদিন অনেকটা জনশূন্য ছিল বন্দরনগরীর প্রায় সব বিনোদনকেন্দ্র। করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় মানুষজন ছিল অনেকটা গৃহবন্দি। জনজীবনের এই স্থবিরতা কাটিয়ে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসুক এটাই সবাই প্রত্যাশা করছে। তবে বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে আগত দর্শনার্থীরা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সে সম্পর্কে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিনোদনকেন্দ্রগুলো খোলার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘স্বাভাবিক জীবনযাপনে আমাদের অবশ্যই ফিরে যেতে হবে। আমার নিজেরও তো একটা বাচ্চা আছে। আমি যখন বাসায় যাই তখন সে প্রথমেই আমাকে বলে, বাবা বাইরে যাব। তার মানে, বাসায় থাকতে থাকতে এমন অবস্থা হয়েছে, শিশুদের মনের উপর চাপ পড়ছে, তারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। যেহেতু কক্সবাজারসহ অনেক জায়গা খুলে দেওয়া হচ্ছে, তাই আমাদেরও বাস্তবতায় ফিরে আসতে হবে।’
স্বাস্থ্যবিধি না মানলে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে- এমন ব্যাপারে সতর্কতা দিয়ে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘আমরা এটাও বলেছি যে, স্বাস্থ্যবিধি সর্বাত্বকভাবে মেনে চলতে হবে। বেশকিছু শর্ত আমরা বেঁধে দিয়েছি। কোনোভাবেই এগুলোর ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না।’
আজ বৈরী আবহাওয়ায় বিনোদনকেন্দ্রগুলোয় দর্শনার্থী তেমন আসতে না পারলেও ধীরে ধীরে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে এমনটাই আশা করছে কর্তৃপক্ষ। তবে আগতদের নিরাপদ দূরত্ব রক্ষা করতে হবে, খাবার দোকানগুলোয় না বসে প্রয়োজনে খাবার কিনে নিয়ে যেতে পারবেন।