হিলি বন্দরে তালমিছরির ঘোষণায় কাপড় আমদানি
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য আমদানির ঘটনা ঘটেছে। এতে সরকারের কয়েক লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। গত শনিবার তালমিছরির ঘোষণা দিয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারত থেকে ফেব্রিক্সগুলো অবৈধভাবে আমদানি করেন। গত রোববার বিকেলে উপজেলা প্রশাসন এগুলো আটক করেন।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে সাড়ে ৩টার দিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
জানা গেছে, আটককৃত ভারতীয় অবৈধ মালামালের মধ্যে রয়েছে বিপুল শাড়ি, ওড়না, লুঙ্গি, থ্রি-পিস, ব্রা ও শার্ট। যার মূল্য কয়েক লাখ টাকা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নূর-এ আলম জানান, ঢাকার কেরানীগঞ্জের মোল্লাবাড়ী রোডের আমদানিকারক মেসার্স এসএন ট্রেডিং কোম্পানির সত্ত্বাধিকারী ফারিয়া সাজেদ হিলি স্থলবন্দরের স্থানীয় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মেসার্স জেস এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে গত শনিবার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে তালমিছরির ঘোষণা দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে ফেব্রিক্স আমদানি করেন। এরপর ওই আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কৌশলে পরের দিন রোববার বিকেলে স্থানীয় সোনালী ব্যাংকে তিন লাখ ৫৯ হাজার ৫৮১ টাকা তালমিছরির রাজস্ব পরিশোধ করে বন্দরের ওয়্যারহাউজ পানামা পোর্ট থেকে বাংলাদেশি দুটি ট্রাকের মাধ্যমে ভারতীয় কাপড়গুলো ঢাকায় পাচার করছিল। এ সময় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তথ্যের ভিত্তিতে বন্দরের সামনে ট্রাক দুটি আটক করে থানায় সোপর্দূ করা হয়েছে। পুলিশ এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ৪৭০টি কার্টনে তালমিছরির ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশি দুটি ট্রাকের মাধ্যমে এসব মালামাল ঢাকায় পাচার করছিলেন। ভারতীয় অবৈধ মালামালসহ দুটি ট্রাক আটক করা হয়েছে।
এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আমদানিকারকসহ সংশ্লিষ্টদের আসামি করে আজকের মধ্যে থানায় মামলা করা হবে। এরপর তাদের ধরতে পুলিশি অভিযান চালানো হবে।
এদিকে, হিলি স্থলবন্দরের কাস্টমসের উপকমিশনার মো. সাইদুল আলম জানান, গত ৮ মে তালমিছরি ভারত থেকে আমদানি হয়ে আসার পর পরই কাস্টমসের কর্মকর্তারা মালামালের পরীক্ষায়ণ ও শুল্কাকায়ণ করেন। এরপর নির্দিষ্ট মালামালের ওপর রাজস্ব পরিশোধের পর মালামলের আউট পাস দেওয়া হয়। কিন্তু আমরা আউট পাস দেওয়ার পর একরাত পণ্যবাহী ট্রাক দুটি বন্দরের পানামা পোর্টে অবস্থান করছিল। তারপর কী হয়েছে এর দায়-দায়িত্ব আমাদের না। তবে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাকিমপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ জানান, কাস্টমসের সহযোগিতা ছাড়া কোনোভাবেই ঘোষণার বাইরে ভারত থেকে কোনো পণ্য আমদানি করা সম্ভব নয়। এই ঘটনা তাদের জানার মধ্যে। এভাবে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য পাচার করে আনা সরকারের লাখ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি হয়েছে। একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে এ কাজ করে আসছে। এসব জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।