সাভারে তরুণ চিকিৎসকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
ঢাকার সাভার থেকে স্যামুয়েল ফলিয়া (৩০) নামের এক চিকিৎসকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পৌর এলাকার দক্ষিণ দরিয়াপুর মহল্লার একটি বাড়ি থেকে গতকাল বুধবার গভীর রাতে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ডা. স্যামুয়েল ফলিয়া এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অনকোলজি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ময়নাতদন্তের জন্য আজ বৃহস্পতিবার সকালে চিকিৎসকের লাশ রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।
স্যামুয়েল ফলিয়া এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। পরে তিনি এই হাসপাতালেই নিজের কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি চাঁদপুর জেলার মিশন রোড এলাকার বার্নবাস বাদল ফলিয়ার ছেলে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার তিলবাড়ি এলাকায় ডা. স্যামুয়েল ফলিয়ার পৈত্রিক বাড়ি হলেও তাঁরা বসবাস করতেন চাঁদপুরে। বছর দেড়েক আগে গোপালগঞ্জের বাসিন্দা এ্যানডি লোরনার সঙ্গে বিয়ে হয় ডা. স্যামুয়েল ফলিয়ার।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিয়ের প্রথম বার্ষিকীর পরপরই দাম্পত্য জীবনে ফাটল ধরে। একপর্যায়ে এ্যানডি লোরনা বাবার বাড়ি চলে যান। ক্রমেই দাম্পত্য সম্পর্ক বিচ্ছেদের দিকে গড়াতে থাকায় মানসিক অবসাদে নিমজ্জিত হন স্যামুয়েল ফলিয়ার।
বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ্যানডি লোরনা টেলিফোন করে ডা. স্যামুয়েল ফলিয়ার ছোট বোন দন্ত চিকিৎসক ডা. পিংকি ফলিয়াকে জানান, স্যামুয়েলের সঙ্গে তাঁর কিছুটা উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে। সে সম্ভবত ঘুমের বড়ি খেয়েছে।
ডা. পিংকি ফলিয়া তাঁর ভাইয়ের মোবাইলে ফোন করেও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ভাইয়ের কাছের বন্ধুদের বিষয়টি জানান। বন্ধুরা দ্রুত বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করলে রাত দেড়টার দিকে পুলিশ ছয়তলা বাসার দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ডা. স্যামুয়েলকে। দ্রুত তাঁকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক নাজিউর রহমান জানান,ডা. স্যামুয়েল ফলিয়ার কক্ষ থেকে একটি সুইসাইডাল নোট পাওয়া গেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে প্রতিশ্রুতিশীল চিকিৎসক হিসেবে ডা. স্যামুয়েল ফলিয়ার অকাল মৃত্যুতে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সহকর্মীদের মধ্যে নেমে আসে শোকের ছায়া।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ জানান, ডা. স্যামুয়েল ফলিয়ার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে চাঁদপুর থেকে তাঁর পরিবারের সদস্যরা এসেছেন। তাদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।