পঞ্চগড়ে কম তাপ, রাজশাহীতে বৃষ্টি
কুড়িগ্রামে ঘনকুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাতভর ঝমঝম করে বৃষ্টির মতো পড়ছে কুয়াশা। পাশাপাশি সকালে ও বিকেলে উত্তরের হিমেল হাওয়া শীতের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
আজ বুধবার দেশের সবচেয়ে কম তাপমাত্রা ছিল উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে। কুড়িগ্রাম আবহাওয়া কার্যালয়ের পর্যবেক্ষক জাকির হোসেন জানান, তেঁতুলিয়া উপজেলায় আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর কাছাকাছি তাপমাত্রা ছিল কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায়। সেখানে তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ বৃষ্টিও হয়েছে উত্তরে। এর ফলে সেখানকার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে আরো বেশি। আবহাওয়া কার্যালয় থেকে জানা যায়, রাজশাহী জেলা এবং সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশে দুই মিলিমিটার করে বৃষ্টি হয়েছে।
ঘনকুয়াশার কারণে কুড়িগ্রামে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মিলছে না সূর্যের দেখা। দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। এ অবস্থায় গরম কাপড়ের অভাবে দুর্ভোগে পড়েছে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষজন। প্রচণ্ড ঠান্ডায় মাঠে যেতে পারছেন না কৃষিশ্রমিকরা।
বিশেষ করে কুড়িগ্রাম জেলার নদ-নদী তীরবর্তী এলাকার চর ও দ্বীপচরে বেশি ঠান্ডা অনুভূত হওয়ায় এখানকার মানুষজন খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। তীব্র শীতে দুর্ভোগ বেড়েছে গবাদি পশুর।
কুড়িগ্রাম শহরের রিকশাচালক মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সকাল ৮টা বাজে, এখনো অনেক শীত। গাড়ি চালাতে পারছি না। অনেক কষ্ট হলেও বাধ্য হয়ে রিকশা নিয়ে বের হয়েছি।’
কুড়িগ্রাম পৌরসভার গড়েরপাড় এলাকার মর্জিনা বেওয়া বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কাজ করে ভাত খাই। গরম কাপড় না থাকায় সকালে বের হতে পারি না।’
কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে শিশুর চিকিৎসা নিতে আসা হজরত আলী জানান, ‘অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে ছেলের ডায়রিয়া হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা নিচ্ছি।’
ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৩১ জন শিশু ও একজন বৃদ্ধ কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাহিনুর রহমান সরদার।
চিকিৎসক জানান, শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় সদর হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সদর হাসপাতালে মোট ২০৪ জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা ৬০ জন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে ৩১ জন শিশু ও একজন বৃদ্ধ। তবে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটে রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন জানান, কুড়িগ্রামের শীতার্ত মানুষের জন্য ৫৩ হাজার ১৮৫টি কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে।