সুন্দরবনের জাহাঙ্গীর বাহিনীর আত্মসমর্পণ
সুন্দরবনের নৌডাকাত জাহাঙ্গীর বাহিনীর প্রধানসহ দলের ২০ সদস্য আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করেছেন। আজ রোববার দুপুরে বরিশাল নগরের রুপাতলীতে র্যাব ৮-এর সদর দপ্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের উপস্থিতিতে তাঁরা আত্মসমর্পণ করেন।
র্যাব ৮-এর উপ-অধিনায়ক মেজর আদনান কবির জানান, এর আগে গতকাল শনিবার র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেন বাহিনীর প্রধান জাহাঙ্গীর হোসেনসহ ২০ সদস্য। তাঁদের কাছ থেকে ৩১টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং প্রায় এক হাজার ৫০৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে র্যার ৮-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আনোয়ার উজ জামানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বিশেষ অতিথি ছিলেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।
আত্মসমর্পণকারীরা হলেন বাগেরহাট ও যশোর জেলার বাসিন্দা মো. জাহাঙ্গীর শিকারী (৩৮), শেখ মো. ফরিদ (৩৮), মারুফ শেখ (৪১), আকরাম শেখ (৩৫), মোস্তাহার শেখ (৫০), এরশাদ খান (৩৫), গাজী তরিকুল ইসলাম (৩৫), কামরুল শেখ (২২), কামরুল হাসান (৩৮), হায়দার শেখ (২৯), হারুন শেখ (৫৫), আইয়ুব আলী শেখ (৫২), মাফিকুল গাজী (৩৮), কবির গাজী (৩২), পলাশ হোসেন (৩৫), বাছের শিকদার (২৬), আবদুল হান্নান সরদার (২৩), ইজাজ মোল্লা (৪১), মহাসিন মোড়ল (৩৯), ইয়াকুব সরদার (২৯)।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘অপরাধ জগত থেকে ফিরে যারাই স্বাভাবিক জীবনে আসবে, সরকার তাদের সব ধরনের সহযোগিতা দেবে। আর যারা অপরাধ ছাড়বে না তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা চাই দেশের মানুষ শান্তি, স্বস্তিতে থাকুক। সে লক্ষে যেকোনো ধরনের অপরাধ দমনে যতখানি কঠোর হওয়ার দরকার, বর্তমান সরকার তা হবে। কোনো অবস্থাতেই কাউকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি করার সুযোগ দেওয়া হবে না।’
র্যাব ৮-এর কর্মকর্তারা জানান, শিবসা নদী সংলগ্ন বিভিন্ন খাল, সাতক্ষীরা রেঞ্জের কাটেশ্বর ও সাপখালী অঞ্চলের সাধারণ মানুষ ছিল জাহাঙ্গীর বাহিনীর টার্গেট। সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন থানায় তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। র্যাব ৮-এর ক্রমাগত কঠোর অভিযানের কারণে কোনঠাসা হয়ে পড়ে জাহাঙ্গীর বাহিনী। এক পর্যায়ে তারা আত্মসমর্পণ করে। ২০১৫ থেকে জাহাঙ্গীর বাহিনী সুন্দরবনে ডাকাতি করে আসছিল।
গত বছরের ৩১ মে সুন্দরবনের জলদস্যু ‘মাস্টার বাহিনী’র ১০ সদস্য, ১৪ জুলাই জলদস্যু ‘মজনু ও ইলিয়াস বাহিনী’র ১১ সদস্য,৭ সেপ্টেম্বর ‘আলম ও শান্ত বাহিনী’র ১৪ জন, ১৯ অক্টোবর ‘সাগর বাহিনী’র ১৩ সদস্য, ২৭ নভেম্বর ‘খোকাবাবু বাহিনী’র ১২ সদস্য র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এ ছাড়া চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি ‘নোয়া বাহিনী’র ১২ সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়।