হলি আর্টিজানে হামলার পর বুঝতে পারি পথ সঠিক নয়
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/03/05/photo-1488732757.jpg)
কুষ্টিয়ায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে নিষিদ্ধঘোষিত হরকাতুল জিহাদের (হুজি) আরো এক ‘সদস্য’ আত্মসমর্পণ করেছে বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তাঁর নাম মিয়া মোর্শেদ শরীফ হাসান ওরফে কল্লোল (৩৮)। তিনি আজ রোববার দুপুরে র্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পে আত্মসমর্পণ করেন।
এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর সালাউদ্দিন ওরফে সুজন নামে আরো এক জঙ্গি আত্মসমর্পণ করেছিলেন। তিনি নিষিদ্ধঘোষিত জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য ছিলেন। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সহযোগিতার অংশ হিসেবে সুজনকে র্যাবের পক্ষ থেকে পাঁচ লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়।
আজ কল্লোলের আত্মসমর্পণ উপলক্ষে র্যাব কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন র্যাব-১২ অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি শাহাবুদ্দিন খান, কুষ্টিয়া র্যাব ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর রবিউল ইসলাম, কল্লোল ওতাঁর বড় ভাই শামীম।
কল্লোলের বাড়ি কুমারখালী উপজেলার দুর্বাচারা ইউনিয়নের দমদমা গ্রামে।
সংবাদ সম্মেলনে কল্লোল জানান, তিনি উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি ধর্মীয় অনুশাসনে বড় হয়েছেন। ২০১৪ ও ১৫ সালে পাশের গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন ওরফে মুক্তি, বাশার, মেসবাহ ও আশরাফের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় ও সখ্যতা গড়ে উঠে।
কল্লোল বলেন, ‘একপর্যায়ে আমরা বিভিন্ন স্থানে মিলিত হয়ে ধর্মীয় বিষয়ে আলোচনা করি। আলোচনার মুখ্য বিষয়বস্তু ছিল জিহাদ। হরতাকুল জিহাদের আঞ্চলিক কমান্ডার মুক্তি, বাশার, মেসবাহর কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের জেহাদি বই, প্রচারপত্র ও অডিও শুনি। এসব শুনেই অনুধাবন করি, হুজি একটি হক (সঠিক) ইসলামী সংগঠন। সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য আমরা দাওয়াতি কাজ করি।’
‘২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সাজ্জাদ, মুক্তি, বাশার, মেসবাহ ও আশরাফ ঢাকায় ডিবি পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। আমার সঙ্গীরা ধরা পড়ার পর আমি ভয় পেয়ে যাই। আমার পোশাক-আশাক পরিবর্তন করি, দাঁড়ি কেটে ছোট করে ফেলি এবং ভয়ে পালিয়ে থাকি।’
কল্লোল আরো বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে গুলশানের হলি আর্টিজান ও শোকাকিয়ায় নারকীয় জঙ্গি হামলা আমাকে ভীষণভাবে নাড়া দেয় এবং ব্যথিত করে। আমি অনুধাবন করতে থাকি, এটা কোনো ধর্মীয় বা হক সংগঠন হতে পারে না। একপর্যায়ে নিজের ভুল বুঝতে পেরে পরিবারকে জানাই। পরিবার সরকারের ডাকে সাড়া দিতে বলে। আমি তাতে উদ্বুদ্ধ হই। পরিবার আমাকে র্যাবের কাছে নিয়ে আসে এবং আমি স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করি।’
জঙ্গিবাদের পথকে অন্ধকার হিসেবে উল্লেখ করে কল্লোল সবাইকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১২ অধিনায়ক শাহাবুদ্দিন খান বলেন, ‘যেসব জঙ্গিরা আত্মসমর্পণ করবে তাদের স্বাভাবিক জীবনে আনতে র্যাব সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। আর না করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’