টেকনাফ থেকে দৌড়ে তেঁতুলিয়ায় গেলেন আরাফাত
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা থেকে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা। এক হাজার চার কিলোমিটারের এই পথ দৌড়েই পাড়ি দিয়েছেন মোহাম্মদ শামসুজ্জামান আরাফাত। আর এতে তাঁর সময় লেগেছে ১৯ দিন।
১৬ কোটি সুস্থ ও সমৃদ্ধশালী মানুষের বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ‘দ্য গ্রেট বাংলাদেশ রান, রান ফর হেলদি বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে টেকনাফ থেকে দৌড় শুরু করেন আরাফাত। এতে সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকায় ছিল এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক এবং কলাকৌশলে ছিল উডপেকার।
আরাফাতের বাড়ি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুসাপুর গ্রামে। বাবা মোশাররফ হোসেন মুক্তিযোদ্ধা। মা বিলকিস আরা গৃহিণী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে বর্তমানে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকে কর্মরত আরাফাত। তিনি একজন সাঁতারুও। বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন দুবার। এখন স্বপ্ন ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার।
আজ সোমবার সকালে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে এসে পৌঁছান আরাফাত। এ সময় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় লোকজন তাঁকে ফুলেল সংবর্ধনা জানায়। পরে বিকেলে তেঁতুলিয়াবাসীর পক্ষ থেকে তেঁতুলতলায় উন্মুক্ত মঞ্চে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম শাহীন, তেঁতুলিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সানিউল ফেরদৌস, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদুর রহমান ডাবলু, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কাজী মাহাবুবুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব আলী উপস্থিত ছিলেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিথিরা আরাফাতের হাতে ক্রেস্ট ও উপহারসামগ্রী তুলে দেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরাফাত জানান, এই যাত্রা মোটেও সহজ ছিল না। নানা প্রতিকূল অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁকে। হাঁটুতে ইনজুরি নিয়ে এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। অনেক কষ্টসাধ্য ছিল নির্মাণাধীন রাস্তায় দৌড়ানো। তাঁর এই যাত্রা সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বঙ্গবন্ধু সেতু। নিরাপত্তার কারণে সেতু অতিক্রম করতে পারেননি তিনি। তাই সাঁতরেই পাড়ি দিতে হয়েছে খরস্রোতা যমুনা। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত আসতে প্রতিদিন গড়ে ৫০ কিলোমিটারেরও বেশি দৌড়েছেন তিনি। তিনি বলেন, এটা একটা মাইন্ড গেম, ধৈর্যশক্তির পরীক্ষাও।
অদম্য মনোবলের অধিকারী আরাফাত জানান, তিনি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের লৌহমানব হতে চান। এর আগে গত বছর ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জীতে ম্যারাথনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। নিজেকে একদিন এভারেস্টের চূড়ায় দেখতে চান আরাফাত।