যাঁরা প্রশংসা করতে পারেন না, তাঁরাই আমাকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন : নৌমন্ত্রী
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/03/10/photo-1489149318.jpg)
সাম্প্রতিক পরিবহন শ্রমিক ধর্মঘট ও অসন্তোষের ব্যাপারে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ যাঁরা করেন, তাঁরা এ ক্ষেত্রে কতটুকু ভূমিকা রাখতে পারেন? শ্রমিকদের ৫২টি ফেডারেশনকে এক করে জ্বালাও-পোড়াওয়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলাম। তার পর থেকে শ্রমিক অসন্তোষ হয়েছে, আন্দোলন হয়েছে; কিন্তু জ্বালাও-পোড়াও-ভাঙচুর হয় নাই।’
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘২০১৫ সালে পুলিশ-বিজিবিসহ অসংখ্য নারী-পুরুষকে যারা হত্যা করেছিল, সেই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আমি সেই দায়িত্ব নিয়ে গাড়ি চালু রেখেছিলাম। শ্রমিকরা জীবন দেওয়ার ভয়ে গাড়ি বন্ধ করে নাই; বরং তারা গাড়ি চালু রেখেছিল।’
‘সে কাজের জন্য যাঁরা প্রশংসা করতে পারেননি, প্রশংসা করতে যাঁরা কার্পণ্য দেখিয়েছেন, তাঁরাই আমাকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আমাকে নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো নৈতিক অধিকার তাঁদের নেই’, যোগ করেন শাজাহান খান।
আজ শুক্রবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ঘুমধুম ইউনিয়নে সম্ভাব্য স্থলবন্দরের জায়গা পরিদর্শন ও পথসভায় অংশগ্রহণ শেষে নৌমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সড়ক দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ, এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত হওয়ার মামলায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স পরিবহনের বাসচালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।
এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি কোনো ধরনের অগ্রিম ঘোষণা ছাড়াই সারাদেশে ধর্মঘটে যায় পরিবহন শ্রমিকরা। এ ধর্মঘট চলাকালেই সাভারের এক বাসচালককে হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেন আদালত। ধর্মঘট চলাকালে রাজধানীর গাবতলীতে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পরদিন সকালেও সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে এক শ্রমিক নিহত হয়। মামলায় হয় এক হাজার দুইশ শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের বাসার বৈঠক থেকে এ ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নৌমন্ত্রী বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনেরও সভাপতি। পরদিন ১ মার্চ মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর দুপুরে তিনি পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করার জন্য শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানান। তারপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
আজ বান্দরবান সফরকালে সংবাদকর্মীরা আবারও বিষয়টি সামনে আনলে মন্ত্রী জবাব দেন। এ সময় তিনি আরো জানান, বান্দরবানে দুটিসহ পার্বত্যাঞ্চলে মোট চারটি স্থলবন্দর নির্মাণ করা হবে। বান্দরবানের মিয়ানমার সীমান্তবতী ঘুমধুম ও চাকঢালায় দুটি, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে একটি করে স্থলবন্দর হবে। এর মধ্য দিয়ে মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য হবে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে নৌ মন্ত্রণালয়ের সচিব অশোক মাধব রায়, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিন ফকির, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা, জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, জেলা পুলিশ সুপার সনজিত কুমার রায়সহ শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
স্থলবন্দরের জায়গা পরিদর্শনকালে মন্ত্রী কয়েকটি পথসভায় অংশ নেয়।