কুড়িগ্রামে পানিবন্দি ৩০ হাজার মানুষ
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, দুধকুমারসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বিভিন্ন গ্রাম ও চরে পানি ঢুকে পড়ায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় জীবন যাপন করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার কুড়িগ্রাম সদর, উলিপুর, চিলমারী, রাজিবপুর, রৌমারী ও নাগেশ্বরী উপজেলার ২৩ ইউনিয়নের নদ-নদী তীরবর্তী দেড় শতাধিক গ্রাম ও চরাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়েছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন এসব এলাকার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। এ অবস্থায় গৃহপালিত পশুপাখি নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয়রা। এ ছাড়া গ্রামের সড়কগুলো তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বানভাসী মানুষদের এখন একমাত্র ভরসা নৌকা ও কলাগাছের ভেলা। বসত ভিটায় পানি ঢুকে পড়ায় অনেক পরিবার উঁচু স্থান ও উঁচু রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে।
উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা চরের মমেনা বেগম বলেন, ‘আজ চারদিন ধরে বাড়িতে পানি উঠেছে। পানির মধ্যে কোনো রকমে চলাফেরা করতেছি। রান্না-বাড়া করা খুব কষ্ট হইছে। গরু-ছাগল, ছোওয়া-পোয়া নিয়া খুব কষ্টে আছি বাবা।’
সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরযাত্রাপুর গ্রামের সবেদ আলী জানান, তাঁরা দিনমজুরের কাজ করে জীবন ধারণ করেন। বাড়িতে পানি ওঠায় রাস্তা নেই, কাজ নেই, নৌকা নেই। এ অবস্থায় ভীষণ বিপদে পড়ে গেছেন তাঁরা।
বন্যাকবলিত এলাকায় সরকারি-বেসরকারিভাবে কোনো ত্রাণ তৎপরতা এখনো শুরু হয়নি।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক এ বি এম আজাদ জানান, বন্যাকবলিত এলাকার সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহীদের কাছ থেকে বন্যাকবলিতদের তালিকা চওয়া হয়েছে। তালিকা পেলে দ্রুত ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ১২ সেন্টিমিটার, নুন খাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ৬ সেন্টিমিটার ও চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি ৬ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।