মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান বরখাস্ত

বিএনপি সমর্থিত তিন মেয়রকে বরখাস্ত করার একদিন পর এবার মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম ও ভাইস চেয়ারম্যান জার্জিস হোসাইনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এঁদের মধ্যে আমিরুল মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও জার্জিস হোসাইন উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করছেন।
গতকাল সোমবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জুলিয়া মইন স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ বরখাস্ত করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে মুজিবনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হেমায়েত উদ্দিন জানান, গতকাল সোমবার রাতে তিনি চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের সাময়িক বরখাস্তের ফ্যাক্সবার্তা পান।
মুজিবনগর থানা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সরকারবিরোধী হরতাল-অবরোধ পালনকালে মুজিবনগর উপজেলার গৌরীনগর গ্রামে পুলিশের ওপর হামলা চালান বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় মুজিবনগর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল হোসেনসহ পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হন। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে আমিরুল ইসলাম ও জার্জিস হোসাইনসহ বিএনপি-জামায়াতের দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করে একটি মামলা করেন। পুলিশের অভিযোগপত্রে আমিরুল ইসলামকে ২ নম্বর ও জার্জিস হোসাইনকে ৯ নম্বর আসামি করা হয়।
উপসচিব জুলিয়া মইন স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়েছে, মামলার অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হওয়ায় জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাঁদের দ্বারা ক্ষমতা প্রয়োগ করা জনস্বার্থবিরোধী। তাই ১৯৯৮ সালের উপজেলা পরিষদ আইন সংশোধিত ২০১১ সালের ১৩(খ)(১) অনুসারে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে গত রোববার দুই ঘণ্টার ব্যবধানে দেশের দুটি সিটি করপোরেশন ও একটি পৌরসভার মেয়রকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এঁরা হলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জি কে গউছ। তাঁরা তিনজনই বিএনপির নেতা।
মামলায় অভিযোগপত্রে তিনজনের নাম থাকায় আইনগত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই তাঁদের বরখাস্ত করা হয়েছে বলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে জারি করা পৃথক প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে। দুপুর ২টা ৫ মিনিট থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে এসব আদেশ তাঁদের কর্মস্থলে পৌঁছায়।
তবে বারবার বরখাস্তের আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের রায়ে দায়িত্বে ফেরা তিন মেয়রই দাবি করেছেন, রাজনৈতিক কারণেই তাঁদের বরখাস্ত করা হয়েছে। এটা ষড়যন্ত্রের অংশ। তাঁরা আইনের আশ্রয় নেবেন।