যৌতুকের জন্য শিক্ষিকাকে কোপালেন স্বামী!
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় যৌতুকের জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকাকে কুপিয়ে জখম করেছেন তাঁর স্বামী মশিউর রহমান মোক্তার। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের নাটেশ্বর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর স্বামী পলাতক।
শিক্ষিকার বাবা ও ভাই জানান, চার বছর ধরে মশিউর তাঁর স্ত্রীকে নির্যাতন করে আসছেন। এ নিয়ে পারিবারিক ও সামাজিকভাবে কয়েকবার সালিস করা হয়েছে। যৌতুকের দাবি মেটাতে চার বছর আগে মালখানগর কলেজ রোডে মশিউরকে একটি দোকান করে দেওয়া হয়। লোকসানের কথা বলে টাকা চাইলে তাঁকে আরো ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এ ছাড়া ঝুট ব্যবসার জন্য এক লাখ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এক বছরে সেখানেও লোকসান দেখান মশিউর। তারপর নারায়ণগঞ্জে বনফুল মিষ্টির এজেন্টের জন্য পাঁচ লাখ টাকা দেন তাঁরা। সেখানেও লোকসান দেখান মশিউর। পরে সালিস করে তিন লাখ ফেরত আনেন। দুই লাখ টাকা লোকসান দেখান।
শিক্ষিকার বাবা বলেন, এক বছর বেকার থাকার পর মশিউর একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকরি নেন। সেখানে তাঁর ভালো লাগে না। তিনি আবার টাকা চান। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মঙ্গলবার সকালে ঝগড়া হয়। রাত ২টার দিকে বড় একটি কাঁচির এক অংশ দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রীকে (তাঁর মেয়ে) এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন মশিউর। তখন তাঁদের ছেলেমেয়ের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে মশিউর পালিয়ে যান। খবর পেয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিক্ষিকাকে সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দুলাল হোসেন জানান, শিক্ষিকার পিঠে, কাঁধে ও বাঁ হাতে ধারালো অস্ত্রের আটটি আঘাত রয়েছে। চিকিৎসা চলছে। তিনি এখন আশঙ্কামুক্ত।
সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়ারদৌস হাসান বলেন, ‘এ ঘটনায় শিক্ষিকার বাবা বাদী হয়ে বুধবার দুপুরে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগ পেয়ে ঘটনাটির তদন্তে পুলিশ পাঠিয়েছি। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’