অভিযোগের কয়দিন পর রিশাকে হত্যা করে ওবায়দুল : মা
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/05/08/photo-1494263870.jpg)
রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা হত্যা মামলায় আসামি ওবায়দুল খানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন নিহতের মা তানিয়া হোসেন।
আজ সোমবার ঢাকার অষ্টম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আবুল কাশেম আলোচিত এ হত্যা মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল।
রিশার মা তানিয়া হোসেন সাক্ষ্য দিয়ে বলেন, ‘ওবায়দুল ফোনে প্রায়ই আমার মেয়ে রিশাকে উত্ত্যক্ত করতে, তাই বাধ্য হয়েই বৈশাখী টেইলার্সের মালিকের কাছে আমরা অভিযোগ করি। এর কয়দিন পরই ওবায়দুল রিশাকে (১৪) ছুরিকাঘাতে হত্যা করে।’ তিনি আরো বলেন, হত্যাকাণ্ডের পাঁচ-ছয় মাস আগে রিশা ও তিনি ইস্টার্ন মল্লিকা মার্কেটে বৈশাখী টেইলার্সে কাপড় সেলাই করাতে যান। এ সময় তিনি ওই দোকানের রসিদের রিসিভ কপিতে ফোন নম্বর দিয়ে আসেন। ওই টেইলার্সের কর্মচারী ওবায়দুল রিসিভ কপি থেকে ফোন নম্বর নিয়ে রিশাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। তিনি মানা করা সত্ত্বেও সে ফোন করত।’
তানিয়া হোসেন বলেন, ‘এ জন্য আমি ও রিশার বাবা রিশাকে স্কুল থেকে আনা-নেওয়া করতাম। হঠাৎ আমি ডায়াবেটিসে ও রিশার বাবা লিভারের সমস্যার কারণে একটি পরিবহন ঠিক করি। পরিবহনে আনা-নেওয়ার তিনদিনের মাথায় আমার মেয়ে খুন হয়।’ এরপর রিশার বাবা রমজান হোসেনও আদালতে সাক্ষ্য দেন।
সাক্ষ্য শেষে বিচারক পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৭ মে দিন ধার্য করেছেন।
গত বছরের ১৪ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলী হোসেন রিশা হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে ২৬ জনকে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে।
গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আহসান হাবীবের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা অনুযায়ী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ওবায়দুল।
জবানবন্দিতে ওবায়দুল বলেন, ‘আমি রিশাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু সে আমার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। তাই আমি তাকে ছুরিকাঘাত করি।’
গত বছরের ৩১ অক্টোবর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) এইচ এম আজিমুল হকের নেতৃত্বে ওবায়দুলকে নীলফামারী থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় আনা হয়।
গত ২৫ অক্টোবর দুপুরে ঢাকার কাকরাইলে স্কুলের সামনে ফুটওভার ব্রিজের ওপর রিশার পেট ও হাতে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান টেইলার্স কর্মচারী ওবায়দুল। রিশাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় রিশার মা রমনা থানায় দণ্ডবিধির ৩০৭ (হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত) ধারায় মামলা দায়ের করেন। পরে রিশার মৃত্যু ঘটলে তা সরাসরি দণ্ডবিধির ৩০২ (হত্যা) মামলায় রূপান্তরিত হয়।