পাবনায় আ.লীগ নেতাকে অপহরণের অভিযোগ, বিক্ষোভ
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/07/03/photo-1435906086.jpg)
পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত আলী বিল্লুকে আইনজীবী সমিতি থেকে অপহরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন আইনজীবীরা। তাঁরা দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বৃহস্পতিবার জজকোর্টের সব আদালত বর্জন করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। বেলায়েত আলী বিল্লু পাবনা জজকোর্টে রাষ্ট্রপক্ষের সদ্য বিদায়ী আইনজীবী (পিপি)।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে পাবনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি শাজাহান মণ্ডলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ বিশ্বাস হেলালের পরিচালনায় প্রতিবাদ সভায় জেলার জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা বক্তব্য দেন। তাঁরা অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন।
পাবনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি শাজাহান মণ্ডল এনটিভি অনলাইনকে জানান, গত ২২ জুন বেলা ১১টার দিকে এলাকার ঝামেলার জের ধরে পাবনা জজকোর্টের সাবেক পিপি ও পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত আলী বিল্লুকে ৩০/৩৫ সশস্ত্র যুবক জেলা আইনজীবী সমিতির মোখতার বারে ঢুকে অস্ত্র দেখিয়ে অপহরণ করে এবং শহরের মাটিয়া সড়কে নিয়ে বন্দী করে রাখে ও মারধর করে। এ ছাড়া বেলায়েতকে গালাগাল করে পোশাক (গাউন) ছিঁড়ে ফেলে। পরে পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্সের হস্তক্ষেপে পুলিশ বেলায়েত আলীকে উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেয়।
এ ঘটনায় বেলায়েত কোনো মামলা না করে জেলা আইনজীবী সমিতির কাছে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার জেলা আইনজীবী সমিতির বিশেষ সভায় বিষয়টি আলোচিত হয় এবং সমিতির সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সভাপতি শাজাহান মণ্ডল বাদী হয়ে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ আবদুল হান্নান ও তাঁর ভাতিজা পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রুমনসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। বিচারক বিষয়টি পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এজাহার হিসেবে গণ্য করার আদেশ দেন। পাবনা সদর থানায় ওই দুজনসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
পাবনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শহিদুল্লাহ বিশ্বাস হেলাল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘উকিল বারের মধ্যে ঢুকে আইনজীবীকে ফিল্মি স্টাইলে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে যে উদ্ধত দেখিয়েছে, তার নিন্দার ভাষা আমাদের জানা নেই। আইনজীবীদের মর্যাদা রক্ষার জন্য এই আন্দোলন।’
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসানুল হক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, বুধবার আদালতের নির্দেশে পাবনা শহরের শালগাড়িয়া মহল্লার আবদুল হান্নান ও রফিকুল ইসলাম রুমনসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে অপহরণ, মারধর ও অস্ত্র আইনে সদর থানায় মামলা করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ আবদুল হান্নান তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘গত ১০ জুন দুপুরে আমার ভাতিজা পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রুমনের বাড়িতে ডাকাতি হয়। এ সময় ডাকাতরা ১৫ লাখ টাকাসহ ৬০ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। এই ডাকাতির মামলায় ওই এলাকার যুবলীগ নেতা আরিফুর রহমান টিংকু ও সন্ত্রাসী মুরাদ জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। পুলিশ টিংকুর কার্যালয় থেকে ডাকাতিতে ব্যবহৃত হওয়া মুখোশও উদ্ধার করে। এ ঘটনার পেছনে অ্যাডভোকেট বিল্লুর মদদ ছিল। ফলে এলাকার লোকজন বিল্লুর বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেন। গত ২২ জুন বিল্লু ডাকাতদের বাঁচাতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে আদালতের মধ্যে অস্ত্র দেখিয়ে আমাদের হুমকি দেয়। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধরা উত্তেজনার বশে বিল্লুকে তুলে নেয়। এ ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’