সীমান্তে রাখালের লাশ, বিএসএফের বিরুদ্ধে অভিযোগ
সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর এলাকায় ভারত সীমান্তবর্তী ইছামতি নদী থেকে আজ রোববার বাংলাদেশি রাখাল রুবেল হোসেনের (২৩) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা গত বুধবার রাতে তাঁকে নির্যাতন করে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ করেছেন রুবেলের এক স্বজন।
রুবেল (২৩) সাতক্ষীরার সদর উপজেলার হাড়দ্দহা গ্রামের মোসলেম আলীর ছেলে। তিনি ভারত থেকে গরু আনতে রাখালের কাজ করতেন।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খালিদ বিন ইউসুফ বলেন, ‘লাশটি উদ্ধার করে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই হত্যার সাথে বিএসএফ জড়িত কি না সে বিষয়ে এখনই নিশ্চিত করা যাবে না।’
রুবেলের এক আত্মীয় জানান, বুধবার রুবেল ও তাঁর সহযোগী হাড়দ্দহা গ্রামের দক্ষিণপাড়ার কওসার আলী ও মাঝেরপাড়ার আসাদুলের সাথে ভারতে গরু আনতে যান। রাতে ইছামতি নদী সাঁতরে গরু নিয়ে বাংলাদেশে ফেরার সময় কওসার ভারতীয়দের হাতে আটক হন। তাঁকে ভারতীয় পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এদিকে নদীতে সাঁতার কাটার সময় বিএসএফের রিভার উইংয়ের সদস্যরা রুবেলের শরীরের ওপর স্পিডবোট চালিয়ে দেয়। এতে রুবেল গুরুতর আহত হন। বিএসএফ সদস্যরা তাঁকে বোটে তুলে ফের নির্যাতন করে নদীতে ফেলে দিলে মারা যান রুবেল। এসব ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী আসাদুল নদী সাঁতরে বাংলাদেশে আসেন। পরে নদী তীরবর্তী শাখরা বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা তাঁকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন।
ইছামতী নদী তীরবর্তী গ্রামের লোকজন জানান, রুবেলের লাশ কয়েকদিন ধরে পানিতে ভাসতে দেখলেও বিজিবি সদস্যরা সেটি উদ্ধারের চেষ্টা করেননি। আজ রোববার বিকেলে বিজিবির শাখরা ক্যাম্পের কাছে এলে বিজিবি তা উদ্ধার করে।
কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা থাকায় এ ব্যাপারে বিজিবির শাখরা ক্যাম্পের সদস্যরা কোনো বক্তব্য করতে চাননি।
যোগাযোগ করা হলে দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক জানান, বিজিবি সদস্যরা তাঁদের জানিয়েছেন, বিএসএফ সদস্যরা রুবেলকে নির্যাতন করে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলতে পারেন।
ওসি জানান, রুবেলে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আটক আসাদুলকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।