ডাইয়ের বিলের বাঁধ অপসারণের দাবি
ডাইয়ের বিলের ছয় হাজার বিঘা জমি অপরিকল্পিতভাবে বেড়িবাঁধ দিয়ে চিংড়ি চাষ করায় ওই এলাকায় পরিবেশ বিপর্যয়সহ জীবনযাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছে সাতক্ষীরার নাগরিক উদ্যোগ।
আজ শনিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে কমিটির নেতারা অবিলম্বে এই বাঁধ সরানোর দাবি জানান। না হলে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন। এ সময় ছয় দফা দাবি তুলে ধরে বলা হয়, তিন লাখ জনগোষ্ঠীর স্বার্থকে কোনোভাবেই জলাঞ্জলি দেওয়া যায় না।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাতক্ষীরা নাগরিক উদ্যোগের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা কাজী রিয়াজ। কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট ফাহিমুল হক কিসলু, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা স্বদেশের পরিচালক মাধব দত্ত, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শাহনাজ পারভিন মিলি, অপরেশ পাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মাত্র এক মাসের ব্যবধানে সাতক্ষীরার পাঁচটি ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের পানিনিষ্কাশন পথ বন্ধ করে একটি প্রভাবশালী মহল ডাইয়ের বিল ও গদাই বিলের ছয় হাজার বিঘা ধানের জমি বেড়িবাঁধ দিয়ে ঘিরে ফেলেছে। এই বিলের মধ্যে থাকা সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ সরকারি খাস খালটিও দখল করে নিয়েছে তারা। ফলে সাতক্ষীরা পৌরসভা, ধুলিহর, লাবসা, বল্লী ও ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের পানিনিষ্কাশন পথ হারিয়ে গেছে।
একই সঙ্গে নোনা পানি ঢুকিয়ে চিংড়ি চাষের ফলে এ এলাকার মানুষ বছরের দুটি ধানি ফসল হারাতে বসেছে। চিংড়ি চাষের নীতিমালা না মেনে এই বাঁধ দেওয়ায় এলাকার পরিবেশ বিপর্যয় ঘটতে শুরু করেছে। বন্ধ হয়ে গেছে গবাদি পশু পালন। এলাকায় দেখা দিয়েছে গরুর দুধের সংকট। কৃষিজমি নষ্ট হওয়ায় হাজার হাজার প্রান্তিক চাষি হয়ে পড়েছেন কর্মশূন্য। এতে বিল সংলগ্ন তিন লাখ বাসিন্দা ক্ষতির শিকার হয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়।
কাজী রিয়াজ বলেন, ‘এতে মানুষ খাদ্য, বাসস্থান সংকটের সম্মুখীন হবে। তাঁরা জলাবদ্ধতার কবলে পড়বেন। নষ্ট হবে পরিবেশও।’
অ্যাডভোকেট শাহনাজ পারভিন মিলি বলেন, ‘তাঁরা জনগণের স্বার্থের কথা বিবেচনায় না এনে জনস্বার্থবিরোধী কাজ করেছেন।’
অ্যাডভোকেট ফাহিমুল হক কিসলু বলেন, ‘এর সঙ্গে জড়িত রয়েছেন প্রশাসনের কিছু লোকও।’
নাগরিক কমিটির ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে : অবিলম্বে বাঁধ অপসারণ, সরকারি খাল ফেরত দিয়ে জনস্বার্থে উন্মুক্ত করা, নীতিমালাবিহীন চিংড়ি চাষ বন্ধ, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, জলাভূমিকে জলাশয় বলে বন্দোবস্ত না দেওয়া এবং জমিকে আগের মতোই ধান চাষের উপযোগী করে তোলা।