আমের ঝুড়ি নিয়ে যুবলীগ ও সৈনিক লীগের সংঘর্ষ, পুলিশের গুলি

কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরশহরের ফুটপাত থেকে আমের ঝুড়ি সরানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ,যুবলীগ ও সৈনিক লীগের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় হামলা ও পুলিশের ছোঁড়া ছররা গুলিতে আহত হয় সাংবাদিক-পুলিশসহ অন্তত ২৫ জন। আহতরা চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।এ ঘটনায় পুলিশ যুবলীগ ও সৈনিক লীগের সাত নেতা-কর্মীকে আহত অবস্থায় আটক করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পৌরশহরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আতঙ্ক ছড়িয়েছে ঈদ বাজারেও। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পৌরশহরের বিপণিকেন্দ্রগুলো সন্ধ্যার পরই জনমানব শূন্য হয়ে পড়ে।
ছররা গুলিবিদ্ধ হয়ে আহতরা হলেন, চকরিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এম জাহেদ চৌধুরী, চকরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) কামরুল আজম, জেলা সৈনিক লীগ নেতা খলিল উল্লাহ চৌধুরী, বাহাদুর মিয়াসহ সাতজন। আর যুবলীগ ও সৈনিক লীগের হামলায় আহতরা হলেন, চকরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুহুল আমিন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআ ই) ফারুক, কনস্টেবল সঞ্জয়,পৌর যুবলীগের সভাপতি হাসানগীর হোছাইন, শ্রমিক লীগ নেতা জহিরসহ ১৮ জন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে,আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে পৌরশহরের ফুটপাতে ক্ষুদ্র ফল ব্যবসায়ীর আমের ঝুড়ি রাখায় তা থেকে বখরা (ঘুষ) চায় পুলিশ। অবৈধভাবে বখরা আদায় করাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও ফল ব্যবসায়ীদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়।একপর্যায়ে আম ব্যবসায়ী বদিউল আলম ও তাঁর ছেলে ইমনকে বেদম প্রহার করে পুলিশ। এ ঘটনায় প্রতিবাদ করায় সোসাইটি জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসাইনের সাথে পুলিশের হাতাহাতি হয়। এ নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠে পরিস্থিতি।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর জানান,আমের ঝুড়ি সরানো নিয়ে তৈরি হওয়া পরিস্থিতির পিরপ্রেক্ষিতে বিকাল ৫টার দিকে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. মাসুদ আলমসহ বিপুল পুলিশ মহাসড়কের নিউমার্কেট পয়েন্টে পৌঁছে। এ সময় তাঁরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে এএসপি, ওসি (তদন্ত), যুবলীগের সভাপতি, সৈনিক লীগ নেতা ও সাংবাদিকরা ক্ষিপ্ত জনতাকে শান্ত রাখার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় উত্তেজিত জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়ে মারলে পুলিশও ফাঁকা গুলি ও ছররা গুলি ছুড়ে। এতে অনেকেই আহত হয়।
পরে পুলিশ সন্ধ্যায় চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহতদের চিকিৎসার খোঁজ নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.সাহেদুল ইসলাম, জরুরি বিভাগে গেলে তাঁদের ওপর হামলা করে যুবলীগ ও সৈনিক লীগের নেতা-কর্মীরা।
এ ঘটনার পর এএসপি মাসুদ আলমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ গেলে তাদের ওপরও হামলা চালানো হয়। এ সময় উপ পরিদর্শক (এসআই)রুহুল আমিনকে পিটিয়ে তাঁর অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায় বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ তখন ১৪ ১৫টি গুলি ছুড়ে ।
ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর আরো জানান, এ ঘটনায় সাতজনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে যুবলীগ দাবি করেছে, এসআই রুহুল আমিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ চাঁদা না পেয়ে ক্ষুদ্র ফল ব্যবসায়ী বদিউল আলম ও তাঁর ছেলে ইমনসহ অপর শিশু ছেলেকে অমানবিক প্রহার করার সময় প্রতিবাদ করলে সোসাইটি জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীরসহ যুবলীগ নেতাদের ওপর হামলা ও গুলি করে পুলিশ।